ড. ইউনূস-তারেক রহমান বৈঠক ইতিবাচক, তবে বিচার ও সংস্কারের অগ্রাধিকার প্রয়োজন: এনসিপি নেতাদের মন্তব্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) ও বিএনপির (BNP) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)–এর বৈঠককে ‘ইতিবাচক’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (National Citizens’ Party – NCP) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (Hasnat Abdullah) ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjis Alam)। তবে তাঁরা বৈঠকে ‘বিচার ও মৌলিক সংস্কার’ প্রশ্নে যথেষ্ট অগ্রাধিকার না পাওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন।

জাতীয় ঐক্যের বার্তা, কিন্তু ঘাটতি রয়েছে বিচার ও সংস্কারে

১৩ জুন (শুক্রবার) রাত ১০টার দিকে তাঁদের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পৃথক পোস্টে এই দুই নেতা বৈঠক সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানান। তারা বলেন, “জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সকল রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য।”

তবে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, নির্বাচনের সময় ও তারিখ নিয়ে যত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, ততটা গুরুত্ব বিচার ও অভ্যুত্থান-পরবর্তী মৌলিক সংস্কারে দেওয়া হয়নি। তাঁদের ভাষায়, “এই সরকার শুধুমাত্র একটি নির্বাচনের আয়োজনের জন্য নয়, বরং অভ্যুত্থানের ভিত্তিতে গঠিত হয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ।”

জুলাই সনদ ছাড়া নয় নির্বাচন

নেতারা স্পষ্ট করে বলেন, “জুলাই মাসের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ এবং ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’, মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক কাঠামোগত সংস্কার চূড়ান্ত হওয়া দরকার। এর আগে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে আলোচনা মূল দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া হবে।”

তাঁদের মতে, “সনদ রচনার আগেই নির্বাচনের মাস বা তারিখ নির্ধারণ একটি গুরুতর রাজনৈতিক ভুল। নির্বাচন হতে হলে তার আগে মৌলিক সংস্কার হওয়া জরুরি।”

নির্বাচন নয়, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আগে

হাসনাত ও সারজিস তাঁদের পোস্টে বলেন, দেশের স্থানীয় পর্যায়ে ইতিমধ্যে “চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশিশক্তির ব্যবহার” ইত্যাদির মাধ্যমে নির্বাচনের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।

তারা মনে করেন, “নির্বাচনের প্রধান পূর্বশর্ত হচ্ছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। তা না হলে নির্বাচনের সময় নির্ধারণের কোনো মূল্য থাকবে না।”

সারসংক্ষেপ

এনসিপি নেতাদের দৃষ্টিতে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক ‘ইতিবাচক সূচনা’, তবে নির্বাচনের আগে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট বিচার ও সংস্কার নিশ্চিত না হলে তা অর্থহীন হয়ে পড়বে। সঠিক নির্বাচনের জন্য দরকার “জুলাই সনদ”, রাজনৈতিক স্বচ্ছতা ও সমান সুযোগ।