এককভাবে সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ যুক্তরাজ্যের এনসিএ’র ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনা

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (Saifuzzaman Chowdhury Javed) এর যুক্তরাজ্যে থাকা বিপুল সম্পদ জব্দ করেছে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) (National Crime Agency (NCA))। এনসিএর ইতিহাসে এটি এককভাবে সবচেয়ে বড় সম্পদ জব্দের ঘটনা বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম (Shafiqul Alam)।

এনসিএ’র নজিরবিহীন পদক্ষেপ

শুক্রবার (১৩ জুন) রাতে ফেসবুক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, এনসিএ’র ইতিহাসে এত বড় একক সম্পত্তি জব্দের ঘটনা আগে ঘটেনি। এর আগে এনসিএ’র একজন মুখপাত্র আল জাজিরা (Al Jazeera)’র ইনভেস্টিগেটিভ ইউনিট (আই-ইউনিট)-কে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আইনগত অনুরোধের ভিত্তিতে সম্পদ ফ্রিজের এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, লন্ডনের অভিজাত সেন্ট জনস উড এলাকায় অবস্থিত ১ কোটি ১০ লাখ পাউন্ড মূল্যের একটি বিলাসবহুল বাড়িও এই আদেশের আওতায় রয়েছে।

শেখ হাসিনার ‘ঘনিষ্ঠ আত্মীয়’ দাবি ও আল জাজিরার অনুসন্ধান

আল জাজিরার ছদ্মবেশী সাংবাদিকদের সঙ্গে ওই বিলাসবহুল বাড়িতেই এক বৈঠকে সাইফুজ্জামান নিজেকে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)’র সন্তানসম এবং ‘ঘনিষ্ঠ পারিবারিক আত্মীয়’ হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বলেন, “আমি শেখ হাসিনার সন্তানের মতো। উনি জানেন আমি এখানে ব্যবসা করি।”

পাচারকৃত সম্পদের পরিমাণ ও আইনি সীমাবদ্ধতা

বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনে বছরে একজন নাগরিক মাত্র ১২ হাজার ডলার পর্যন্ত দেশের বাইরে নিতে পারেন। কিন্তু আল জাজিরার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সাইফুজ্জামান লন্ডন, দুবাই ও নিউ ইয়র্কে প্রায় ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন। এই সম্পদগুলোর কোনোটিই বাংলাদেশের কর বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়নি।

পালিয়ে যাওয়া ও বর্তমান তদন্ত

২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। এরপর থেকেই তার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লোপাটের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে নতুন প্রশাসন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরীকে সেই ক্ষমতাসীন ঘনিষ্ঠদের একজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যিনি রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে বিদেশে সম্পদ গড়েছেন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অর্থপাচার মামলার তদন্ত চলছে।