ড. ইউনূসের ক্ষমতা গ্রহণের পর স্বাধীনতা প্রশ্নবিদ্ধকারীরা এখন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক চায়: ড. মাসুদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (Bangladesh Jamaat-e-Islami)-র কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ (Dhaka South City) শাখার সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ (Dr. Shafiqul Islam Masud) বলেছেন, “যারা এতদিন দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, ড. ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) ক্ষমতা নেওয়ার পর তারা এখন নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চায়।”

“ভালো কাজ করলেই শত্রু তৈরি হয়”

একান্ত সাক্ষাৎকারে জামায়াত নেতা ড. মাসুদ বলেন, “দেশের কল্যাণে কাজ করার কারণে স্বাভাবিকভাবেই প্রফেসর ইউনূসের শত্রু তৈরি হয়েছে। কিন্তু তিনি মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “উনি নিজে ক্ষমতায় আসেননি, তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছে। যখন তাঁকে দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তিনি তখনও বলেন—যদি জনগণ চায়, তাহলে তিনি দেশের কল্যাণে কাজ করবেন। এই উদারতাকেই দেশের মানুষ ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।”

“বাংলাদেশ এক বিধ্বস্ত রাষ্ট্র থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে”

বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রসঙ্গে জামায়াত নেতা বলেন, “বিগত ১৬-১৭ বছর ধরে বাংলাদেশ এক বিধ্বস্ত রাষ্ট্রের মধ্য দিয়ে গেছে। মাত্র ৭-৮ মাসে সবকিছু বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। এই সরকার অনেক চ্যালেঞ্জ নিচ্ছে। তাদের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে, কিন্তু তা ব্যর্থতা নয়। সময় দিতে হবে। সেই সময়েই বোঝা যাবে সরকার কতটা সফল।”

তিনি আরও বলেন, “যারা এতদিন প্রভূত্ব করেছে, তারা এই পরিবর্তন সহজভাবে নিচ্ছে না। এখন দেশ একটি নতুন দিকের দিকে যাচ্ছে—প্রভূত্ব নয়, বন্ধুত্বের রাজনীতি।”

বিদ্যুৎ, দ্রব্যমূল্য ও সীমান্ত পরিস্থিতি তুলে ধরলেন মাসুদ

সরকারের কিছু ইতিবাচক অর্জনের প্রসঙ্গে ড. মাসুদ বলেন, “দ্রব্যমূল্যের স্থিতিশীলতা, বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বাস্তবমুখী পরিকল্পনা এবং সীমান্তে গুলি করে হত্যার মতো ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায় চলে এসেছে—এসবই প্রমাণ করে যে সরকার কাজ করছে।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও বাংলাদেশ এখন প্রভূত্বের নয়, বন্ধুত্বের রাজনীতিতে বিশ্বাস করছে।”

“আন্তর্জাতিক মহলকে রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে”

আন্তর্জাতিক সমালোচনার প্রেক্ষিতে ড. মাসুদ বলেন, “যারা এতদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তারাই এখন নির্বাচিত সরকারের প্রশ্ন তোলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, এই সরকার জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আন্তর্জাতিক শক্তির উচিত দেশের সঙ্গে রাজনীতি নয়, রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক বজায় রাখা।”

“ভালো কাজের পাশে থাকবে জামায়াত”

সাক্ষাৎকারের শেষভাগে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে, যতদিন প্রফেসর ইউনূস দেশের কল্যাণে কাজ করবেন, ততদিন আমরা তাঁর ভালো কাজের পাশে থাকব। আমরা একজন নাগরিক ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে দেশের কল্যাণে কাজ করতে চাই।”