বিশ্বের চতুর্থ গরুর মাংস রপ্তানিকারক ভারতেই গরুর মাংস খাওয়া ‘অপরাধ’!

বিশ্বের অন্যতম গরুর মাংস রপ্তানিকারক দেশ ভারত (India) ২০২৫ সালে প্রায় ১.৬৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন গরুর মাংস রপ্তানি করে আয় করেছে ৩.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মূলত মালয়েশিয়া (Malaysia), ভিয়েতনাম (Vietnam), ইন্দোনেশিয়া (Indonesia) ও ইরাক (Iraq)সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে (Middle East) এই মাংস রপ্তানি হয়।

বৈদেশিক মুদ্রা আয় একদিকে, সহিংসতা অন্যদিকে

অর্থনীতিতে এই রপ্তানির বড় অবদান থাকলেও ভারতের ভেতরে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে চলছে তীব্র সহিংসতা ও বিভেদ। ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তথাকথিত গো-রক্ষকদের (Cow Vigilantes) হাতে অন্তত ২৮ জন নিহত হন। তাদের অধিকাংশই ছিলেন মুসলিম (Muslim)। ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে গণপিটুনিতে মারা গেছেন আরও ৫০ জনের বেশি। শুধু হত্যা নয়— অনেকে গ্রেফতার হয়েছেন, বাড়িঘর হারিয়েছেন, হয়েছেন প্রকাশ্য নির্যাতনের শিকার।

সরকার অনুমোদিত কসাইখানা, তবুও দ্বৈতনীতি

বর্তমানে ভারতে ৩,৬০০-এর বেশি লাইসেন্সপ্রাপ্ত কসাইখানা (Slaughterhouses) রয়েছে, যেগুলো সরাসরি ভারত সরকারের (Indian Government) অনুমোদিত। সরকার এই খাত তদারকি করে এবং ভর্তুকিও প্রদান করে।

ধর্মীয় আবেগ না ভোট রাজনীতি?

বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি শুধু ধর্মীয় নয়— এর পেছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক কৌশল। আন্তর্জাতিক বাজারে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লোভে সরকার একদিকে গরুর মাংস রপ্তানি করছে, অন্যদিকে দেশের ভেতরে তা ‘অপরাধ’ হিসেবে চিহ্নিত করে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে।

প্রশ্ন উঠছে, যেখানে সরকারি অনুমোদনে জবাই করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হচ্ছে, সেখানে নিজ দেশে গরুর মাংস খাওয়াকে কি করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বানানো হয়?

বাস্তবতার মুখে ধর্মের মুখোশ

বাস্তবতা হলো— ভারতের কাছে এখন ‘পবিত্র’ ধর্মীয় গরুর চেয়ে পবিত্র হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রা। ধর্মীয় অনুভূতির আড়ালে লুকানো রাজনৈতিক দ্বৈতনীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করছেন বিশ্লেষকরা।

সূত্র অরিজিন মিডিয়া (Origin Media)
ভিডিও দেখুন:** YouTube লিংক