নিজেদের সঙ্গে বিএনপিকেও ডুবিয়ে না ফেলে বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সতর্কতা সারোয়ার তুষারের

জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizen Party)–এর যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার (Sarwar Tushar) বলেছেন, একসময় যারা আওয়ামী লীগকে (Awami League) ক্ষমতায় বসাতে ‘ঐতিহাসিক জরুরত’ তৈরি করেছিলেন, তারাই এখন বিএনপিকে (BNP) প্রগতিশীলতার ভ্যানগার্ড বানানোর চেষ্টা করছেন। শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এই বক্তব্য দেন।

‘সিভিল সোসাইটি মূলত ক্ষমতাপন্থী’

সারোয়ার তুষার তার পোস্টে বলেন, “বাংলাদেশের সিভিল সোসাইটি মূলত ক্ষমতাপন্থী। তারা খুব দ্রুত ক্ষমতার হাওয়াটা ধরতে জানে।” তিনি ব্যঙ্গ করে বলেন, “বিএনপির খুন-খারাবি বা চাঁদাবাজি থাকলেও যেহেতু তারা ‘ব্যবস্থা নিচ্ছে’, তাই তাদের উপর ভরসা রাখুন—এটাই যুক্তি।”

তিনি আরও যোগ করেন, “একসময় বিএনপিকে মৌলবাদী, জামায়াতপন্থী, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক বলা হয়েছে। এখন সেই একই সিভিল সোসাইটি তাদের মৌলবাদ দমন প্রকল্পে বিএনপিকে ঢাল বানাচ্ছে। আল্লাহ না করুক, তারা যেন নিজেদের সঙ্গে বিএনপিকেও না ডুবিয়ে ফেলে।”

‘বুদ্ধিজীবীরা রাজনৈতিক দলের চেয়েও পশ্চাৎপদ’

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীরা এখন রাজনৈতিক দলগুলোর চেয়েও পশ্চাৎপদ ও আপসকামী। আহমদ ছফা যেমন বলেছিলেন—বুদ্ধিজীবীদের কথা শুনলে দেশ স্বাধীন হতো না—এখনও তা-ই সত্য। আজকের বুদ্ধিজীবীদের কথা শুনলে দেশে গণ-অভ্যুত্থান, এমনকি মৌলিক সংস্কারও হবে না।”

‘সংস্কারবিমুখ রাজনীতির ফাঁদে পড়েছে বিএনপি’

সারোয়ার তুষার বলেন, “যারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে বিএনপিকে স্যাংশন-নির্ভর আন্দোলনে উৎসাহ দিয়েছিল, তারাই এখন বিএনপিকে সংস্কারবিমুখ, নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতির পথে নিয়ে যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১০ মাসে বাংলাদেশের নির্বাচনে এক সেকেন্ডের জন্যও কোনো অনিশ্চয়তা তৈরি হয়নি। সবই মিডিয়ার বানানো গল্প ছিল। এই পশ্চাৎপদ বুদ্ধিজীবীদের কারণে বিএনপি ইতিহাসের ডাক মিস করছে, যার বড় ক্ষতি হবে দলের নিজেদেরই।”

‘গণতন্ত্রের পথে গেলে স্মরণীয় হতো বিএনপি’

তিনি মন্তব্য করেন, “রাষ্ট্রের স্বৈরতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে নির্বাচনে গেলে বিএনপি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকত। কিন্তু বুদ্ধিজীবীদের চাপে পড়ে তারা এই অভ্যুত্থানকে কেবল ক্ষমতা হস্তান্তরের ইস্যুতে সীমিত করেছে।”

তিনি সতর্ক করেন, “সংস্কারহীন নির্বাচনে দেশের যেমন ক্ষতি হবে, তেমনি বিএনপির জন্যও তা আত্মঘাতী প্রমাণিত হতে যাচ্ছে। আজকে কিছু তেল-মাখানো কথা বিএনপির কানে ভালো লাগতে পারে, কিন্তু ইতিহাসের বিচার বড় নির্মম হয়।”