ঈদযাত্রায় উত্তরাঞ্চলের ভোগান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ সারজিস আলমের

জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party)–এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjis Alam) উত্তরাঞ্চলের ঈদযাত্রায় চরম ভোগান্তির চিত্র তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

টোল প্লাজা ও সড়ক অবকাঠামোর ত্রুটির অভিযোগ

শনিবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে সারজিস আলম উল্লেখ করেন, শুধুমাত্র সংকীর্ণ টোল প্লাজার কারণে যমুনা সেতু (Jamuna Bridge)–র পূর্বদিকে ২০ কিলোমিটারের বেশি যানজট তৈরি হয়, যেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। তবুও এর কোনও কার্যকর সমাধান দেখা যাচ্ছে না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা (Dhaka) থেকে রংপুর (Rangpur) মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ চলছে এক দশকের বেশি সময় ধরে, কিন্তু এখনো শেষ হয়নি। বিশেষ করে গোবিন্দগঞ্জ (Gobindaganj) ও পলাশবাড়ি (Palashbari) এলাকায় কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় সেখানেও দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে হয়েছে।

রেলপথে দীর্ঘ যাত্রার চিত্র

সারজিস আলম আরও অভিযোগ করেন, ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও (Thakurgaon), পঞ্চগড় (Panchagarh) বা দিনাজপুর (Dinajpur) যেতে এখনো ১২-১৫ ঘণ্টা লেগে যায়। সাধারণ রুট ঢাকা–বগুড়া (Bogra)–রংপুর হয়ে যাওয়া হলেও রেলপথে যাত্রীদের প্রায় ২০০ কিলোমিটার বেশি ঘুরে রাজশাহী (Rajshahi), নওগাঁ (Naogaon), নাটোর (Natore) হয়ে যেতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, এবারের ঈদে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় যেতে তাঁর সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা, ফিরতে লেগেছে ১৫ ঘণ্টা, অনেকের ক্ষেত্রে তা ২০ ঘণ্টাও ছাড়িয়েছে। ২০২৫ সালে দাঁড়িয়ে যদি রাজধানী থেকে দেশের এক প্রান্তে পৌঁছাতে এত সময় লাগে, তবে ‘উন্নয়নের গল্প অপ্রাসঙ্গিক’ হয়ে দাঁড়ায়।

টোল ব্যবস্থা সংস্কারের আহ্বান

সারজিস আলম উল্লেখ করেন, যমুনা সেতুতে ব্যয়কৃত অর্থ ৬-৭ বছর আগেই টোলের মাধ্যমে আদায় হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও এখনো সংকীর্ণ টোল প্লাজা রেখে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ানো হচ্ছে। তার প্রস্তাব—অথবা টোল আদায় বন্ধ করতে হবে, না হলে টোল বুথ তিনগুণ বাড়াতে হবে যাতে কৃত্রিম জ্যাম দূর করা যায়।

রাজনৈতিক বার্তা ও উত্তরবঙ্গের দাবি

সারজিস আলম বলেন, উত্তরাঞ্চলের মানুষ এতদিন শুধু শোষণের শিকার হয়েছে। আগামীতে এই বৈষম্য মেনে নেওয়া হবে না। তিনি দাবি করেন, ঢাকা থেকে বিভাগীয় শহরগুলোর রাস্তা এক্সপ্রেসওয়ে বা চার লেন করতে হবে। আন্তঃবিভাগীয় রেলপথে যাত্রীদের দ্রুত পৌঁছানোর ব্যবস্থা এবং ট্রেনের মানোন্নয়ন করতে হবে।

উত্তরবঙ্গের জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের সমস্যা তুলে ধরুন। রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে এই সমস্যার সমাধান থাকা উচিত। যারা জনগণের জন্য কাজ করবে না, তাদেরকে বর্জন করার আহ্বান জানান তিনি।