বিএনপি নেতা (Ishraq Hossain) দাবি করেছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation) বা ডিএসসিসির অচলাবস্থার জন্য দায়ী স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan) ও তার সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রোববার নগর ভবনে এক অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
নগর ভবনে অবস্থান কর্মসূচি ও ইশরাকের বক্তব্য
ঈদের বিরতির পর রোববার সকাল থেকে ইশরাক হোসেনের সমর্থকেরা ডিএসসিসির নগর ভবনে পুনরায় অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে ইশরাক সেখানে উপস্থিত হয়ে বলেন, “নগর ভবনে যে অচলাবস্থা চলছে, তার জন্য একমাত্র দায়ী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, তার সচিব ও অন্যান্য কর্মকর্তারা, যারা বাধা দিচ্ছেন।”
তিনি বলেন, “আমরা বারবার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, আন্দোলন করেছি, গণমাধ্যমের মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছি। কিন্তু সরকারকে বোঝানো যাচ্ছে না যে, আমরা এই লড়াইয়ে জেতার জন্য এসেছি। কারণ, আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত। এই লড়াই জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াই।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ইশরাক বলেন, “যদি মনে করেন আন্দোলন এমনিতেই থেমে যাবে, তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। আমি আবারও অনুরোধ জানাচ্ছি—নগরবাসীর দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করুন। আমরা যৌক্তিক সমাধান চাই।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন এমন এক অবস্থানে আছি, যেখান থেকে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। বিরতিহীন আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই নগর ভবনে অবস্থান করবো।”
আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্দোলনের অব্যাহত ঘোষণা
ইশরাক জানান, “আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনায় বিশ্বাস করি। আদালতের রায় জনগণের রায়ের সঙ্গে একীভূত করুন। আমরা এখান থেকে সরে যাবো না।”
রোববার সকাল ১১টার দিকে তিনি নগর ভবনে প্রবেশ করেন এবং সমর্থকদের সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, “দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিষয়টির নিষ্পত্তি করুন, তাহলেই অচলাবস্থা কেটে যাবে। না হলে আন্দোলন চলবে।”
নির্বাচন, মামলা ও ট্রাইব্যুনালের রায়
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিএসসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস (Sheikh Fazle Noor Taposh) বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ৩ মার্চ ইশরাক মামলা করেন।
পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল ফলাফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে। এরপর ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে তাকে ডিএসসিসি মেয়র হিসেবে ঘোষণা করে।
কিন্তু ১৪ মে হাইকোর্টে রিট করে তার শপথ নেওয়া বন্ধের আবেদন করা হয়। ফলে ১৫ মে থেকে ইশরাকের সমর্থকেরা মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।