গণতন্ত্র ও দেশের মালিকানা পুনরুদ্ধারে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: আমীর খসরু

বিএনপি (BNP) গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে দ্রুত একটি নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury)। সোমবার দুপুরে লন্ডন (London) থেকে দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Shahjalal International Airport)-এ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

জনগণের ভোটাধিকার ও নির্বাচনের দাবি

আমীর খসরু বলেন, দেশের মানুষ গত ২০ বছর ধরে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। নতুন প্রজন্মেরও ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়নি। তাই জনগণ দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক উত্তরণ চায়—এটিই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, জাতির মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

সংস্কার ও ঐকমত্য প্রসঙ্গে মন্তব্য

বিএনপি কি রোজার আগেই বিচার ও সংস্কারে অগ্রগতি চায়—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সংস্কার নির্ভর করে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ওপর। এ বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus), তারেক রহমান (Tarique Rahman) এবং বিএনপির নেতারা ইতোমধ্যেই মত প্রকাশ করেছেন।

তাঁর মতে, ঐকমত্য গঠনে এক থেকে দেড় মাসের বেশি সময় লাগার কথা নয়।

বিচার প্রক্রিয়া চলমান, নির্বাচনের বিকল্প নেই

বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমীর খসরু বলেন, এটি বিচার বিভাগের ওপর নির্ভরশীল একটি চলমান প্রক্রিয়া। তিনি বলেন, যাদের বিচারের আওতায় আনা হবে, তাদের জন্য ছয় মাস সময় আছে। আর যাদের আনা সম্ভব হবে না, তাদের বিষয়ে আগামী সরকার ব্যবস্থা নেবে।

তিনি জানান, “আগামী সরকারের অনেককেও বিচারের আওতায় আনতে হতে পারে। এটি সমস্যা নয়, বরং একটি স্বাভাবিক বিচারিক প্রক্রিয়া।”

নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা ও সময়সীমা নিয়ে মন্তব্য

নির্বাচন ছাড়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার কোনো পথ নেই বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি আগেও বলেছিল, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়। তবুও যদি নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হয়, তাতেও আপত্তি নেই।

রাজনৈতিক দলের মতামত ও সরকারের নিরপেক্ষতা

জামায়াত (Jamaat) ও এনসিপি (NCP) সরকারের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের অভিযোগ তুললে, আমীর খসরু বলেন, “গণতন্ত্রে সবাই মতামত দিতে পারে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” তিনি গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে অগ্রসর হওয়ার ওপর গুরুত্ব দেন।

তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

তারেক রহমানের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে নির্বাচন প্রসঙ্গে কোনো নির্দিষ্ট আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আমীর খসরু বলেন, “নির্বাচনের শুরুতেই নিরপেক্ষতার বিষয়টি সরকার নিশ্চিত করবে। কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট মানেই নিরপেক্ষ সরকার।”

সংস্কার নিয়ে বৈঠকে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐকমত্য যতটা হবে, সংস্কারও ততটাই হবে। অবশিষ্ট সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির কাছে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি আরও বলেন, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, এটি নির্বাচনের পরেও অব্যাহত থাকবে।”