ক্ষমতা হারিয়ে নিষিদ্ধ অবস্থাতেও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ (Awami League)। সম্প্রতি রাজধানী ঢাকা (Dhaka)সহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, ঝটিকা মিছিল ও ছিনতাইয়ের ঘটনার পেছনে দলটির সংশ্লিষ্টতার তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা সংস্থা।
রাজধানীতে ককটেল উদ্ধার ও বিস্ফোরণ
সোমবার (১৬ জুন) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Dhaka) এলাকায় শাহবাগ থানা (Shahbagh Police Station) পুলিশের সহায়তায় সাতটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ছয়টি পাওয়া যায় কাজী মোতাহার হোসেন ভবনের পাশে গাছের নিচে। একইদিন সকালে হাইকোর্ট এলাকায়ও দুটি ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়।
ডিএমপি (DMP)’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এসএন নজরুল ইসলাম বলেন, “ধানমন্ডি ও হাইকোর্টসহ বিভিন্ন এলাকায় ককটেল ও ঝটিকা মিছিলের ঘটনা নজরে এসেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।”
অস্থিরতা তৈরিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২৩ জুন দলীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা তৈরির লক্ষ্যে একাধিক গোপন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলটি ১৬ জুলাই পর্যন্ত সময়কে ‘টার্গেট পিরিয়ড’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
তথ্য অনুযায়ী, বিদেশে অবস্থানরত শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ও অন্যান্য নেতারা জুম, হোয়াটসঅ্যাপ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৈঠক করে সরকারবিরোধী পরিকল্পনা করছে। তাদের মূল লক্ষ্য ড. ইউনূস (Dr. Yunus) নেতৃত্বাধীন সরকারকে ব্যর্থ করা।
রাজধানীতে বাড়ছে ছিনতাই, সন্দেহে আওয়ামী লীগের সম্পৃক্ততা
গত কয়েক দিনে ডেমরা, উত্তরা, মোহাম্মদপুর এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই বেড়েছে। অনেকেই এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ-পন্থী লোকজনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন।
সচিবালয় অচল করার পরিকল্পনাও রয়েছে
সরকারি চাকরি বিধি সংশোধনের নামে চলমান আন্দোলনের পেছনেও আওয়ামী লীগ-পন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বড় অংশ সক্রিয় রয়েছে বলে গোয়েন্দা তথ্য বলছে। তাদের লক্ষ্য সচিবালয়ের কার্যক্রম অচল করে প্রশাসনিক অস্থিরতা তৈরি করা।
ঝটিকা মিছিল ও লক্ষ্যস্থল
গোপন পরিকল্পনায় ধানমন্ডি ৩২ ও ২৭, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান (Suhrawardy Udyan), জিগাতলা, বসিলা, পল্লবী মেট্রো এলাকা, বনানী ও বিমানবন্দর এলাকায় ঝটিকা মিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল ধানমন্ডিতে মাত্র ২৭ সেকেন্ডের একটি মিছিলের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
একজন ডিএমপি কর্মকর্তা বলেন, “আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় ছিল। এখন তাদের কিছু অংশ মাঠে সক্রিয় হয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইছে। প্রশাসন বিষয়টি নজরে রেখেই পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
