সাংবাদিকতার পরিচয়ে হত্যার পরামর্শদাতাদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন

জাতীয় প্রেস ক্লাব (National Press Club)-এ অনুষ্ঠিত সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি (BNP)-র স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন (Dr. AZM Zahid Hossain) কড়া ভাষায় বলেন, “যারা মানুষ হত্যার পরামর্শ দেয়, তারা কীভাবে সাংবাদিক হয়?”

তিনি প্রশ্ন তোলেন, এ ধরনের ব্যক্তিরা কীভাবে এখনো মিডিয়ায় কর্তৃত্ব ধরে রেখেছে? তিনি বলেন, “তাদের মূল প্রতিষ্ঠাতা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) পালিয়ে গেছেন।”

আওয়ামী লীগ ও স্বাধীন মতপ্রকাশ নিয়ে অভিযোগ

ডা. জাহিদ বলেন, আওয়ামী লীগ (Awami League) কখনোই গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। কারণ, তারা যখনই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে, তখন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কিছু সাংবাদিক ব্যক্তি স্বার্থে সাংবাদিকতাকে ব্যবহার করেছেন। কেউ কেউ শতকোটি টাকার ব্যাংক লেনদেন করেছেন, আবার কেউ দেশের বাইরে বাড়িও করেছেন।”

সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে বেঈমানি

বিএফইউজে (BFUJ) মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী (Kader Gani Chowdhury) বলেন, “৫০ বছর পরও আমরা কেন সংবাদপত্রের কালো দিবস নিয়ে আলোচনা করি? কারণ এমন ভয়াবহ দিন আর কখনো আসেনি।”

তিনি বলেন, “সেদিন রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটা সদ্যস্বাধীন দেশের মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে বেঈমানির নামান্তর।”

তিনি অভিযোগ করেন, শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman) যেভাবে গণমাধ্যম দমন করেছিলেন, তা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায়নি।

তার ভাষায়, “আমরা চাই একটি মানবিক রাষ্ট্র, যেখানে গুম, খুন, মামলা ও নির্যাতনের জায়গা থাকবে না।”

‘বাকশাল’ ও ঐক্যের বার্তা

জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ও কালের কণ্ঠ সম্পাদক হাসান হাফিজ (Hasan Hafiz) বলেন, “বাকশালের মাধ্যমে শেখ মুজিব আওয়ামী লীগকেও বিলীন করে দিয়েছিলেন।”

তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান (Ziaur Rahman) ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি আওয়ামী লীগকে মুক্ত করেছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “মিডিয়াকে অস্থিতিশীল করতে দেশ ও বিদেশে ষড়যন্ত্র চলছে। এ কারণে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মিডিয়া যেন ফ্যাসিস্টমুক্ত হয়, সে জন্য সবার কাজ করতে হবে।”

অন্যান্য বক্তারা

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজে (DUJ) সভাপতি শহিদুল ইসলাম (Shahidul Islam)।

উপস্থিত ছিলেন ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম (Khurshid Alam), বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন (Obaidur Rahman Shaheen) এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ (Syed Abdal Ahmed)।