শপথ ছাড়া দায়িত্ব নেব না, আইন না থাকলে আগেই বসতাম: ডিএসসিসি মেয়র পদে ইশরাক হোসেন

বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক হোসেন বলেছেন, আইনি বাধ্যবাধকতা না থাকলে তিনি ইতিমধ্যেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (Dhaka South City Corporation) মেয়রের দায়িত্বে বসে যেতেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) নগর ভবনে এক প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন।

আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রতারণার অভিযোগ

ইশরাক বলেন, “স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী শপথগ্রহণ ছাড়া আমি মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে পারি না। বিশ্বাস করুন, যদি আইনে শপথের বিষয়টি না থাকত, তাহলে এতদিনে আমি দায়িত্ব নিয়ে ফেলতাম।”

তিনি অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ২৭ এপ্রিল সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করলেও শপথ অনুষ্ঠান না করে ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে তিনি স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া-এর পদত্যাগ দাবি করেন এবং তাকে জনগণের রায় ও আদালতের আদেশের প্রতি অবজ্ঞাকারী বলে অভিহিত করেন।

দুর্নীতির অভিযোগ ও দুদকের প্রতি আহ্বান

ইশরাক হোসেন দাবি করেন, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধা নিতে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে রাখতে চান। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শপথ বিলম্বিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, “আমি দুর্নীতি দমন কমিশনকে (Anti-Corruption Commission) আহ্বান জানাবো, আপনারা এসে উপদেষ্টার কয়েক মাসের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করুন।”

মেয়রের দায়িত্ব না নেওয়ার ঘোষণা

ইশরাক ঘোষণা দেন, আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ না নেওয়া পর্যন্ত তিনি মেয়রের দায়িত্ব পালন করবেন না। তিনি জানান, জনগণের জরুরি সেবা কার্যক্রম কীভাবে চালু রাখা যায়, সে বিষয়ে কাজ করছেন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে চলমান সেবা সম্পর্কে উপদেষ্টার অজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

গেজেট ও শপথ বিলম্বের অজুহাত

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেছেন, গেজেটের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় শপথ নেওয়া যায়নি। তবে ইশরাক হোসেন এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার একটি পরিকল্পিত কৌশল।

তিনি আরও বলেন, “এই যুক্তি যদি গ্রহণযোগ্য হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো জনপ্রতিনিধিই শপথ নিতে পারবে না।”

প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি ও বক্তব্য

মঙ্গলবার সকালে নগর ভবনে ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা প্রতীকী অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সেখানে ইশরাক লিখিত বক্তব্য পাঠ করে বলেন, জনগণের ম্যান্ডেটের প্রতি অসম্মান করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সেবা কার্যক্রম সচল থাকলেও প্রশাসক ভুল তথ্য উপস্থাপন করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন।

তিনি বলেন, “তিনি (উপদেষ্টা) জানেন না ওয়ার্ড সচিবরা কী কাজ করেন, কীভাবে বর্জ্য অপসারণ হয় বা টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হয়। এটি তার অজ্ঞতা এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তি।”

ইশরাক উপদেষ্টা সজীব ভূঁইয়ার প্রতি আহ্বান জানান, “আপনি তরুণ, আপনার সামনে দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ। জনগণের রায় ও আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকুন।”