এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার পর সতর্ক অবস্থানে বিমান বাংলাদেশ, ৬ ড্রিমলাইনারে ত্রুটি মেলেনি

ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া (Air India)র একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার (Boeing 787-8 Dreamliner) দুর্ঘটনায় পতিত হওয়ার পর সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (Biman Bangladesh Airlines)। বিমানের বহরে থাকা ৬টি ড্রিমলাইনারের সবগুলোতে সুক্ষ্মভাবে পরীক্ষা চালানো হয়েছে এবং কোনো ত্রুটি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. সাফিকুর রহমান (Dr. Safiqul Rahman)।

সতর্কতার অংশ হিসেবে বাড়ানো হয়েছে তদারকি

মঙ্গলবার রাজধানীর বলাকা ভবনে নিজ কার্যালয়ে ড. সাফিকুর রহমান জানান, ভারতে দুর্ঘটনার পর বিমানের ৬টি ড্রিমলাইনার তদারকি করেন তিনি নিজেই। তিনি বলেন, “আমরা তাৎক্ষণিক বোয়িং কোম্পানির (Boeing) সঙ্গে যোগাযোগ করি এবং পরামর্শ অনুযায়ী ইঞ্জিন, ফ্লাইট কন্ট্রোল, ফুয়েল সিস্টেমসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহ পরীক্ষা করি। আল্লাহর রহমতে, সবকিছুই ঠিকঠাক পাওয়া গেছে।”

প্রকৌশল বিভাগের কার্যক্রম

বিমানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রকৌশল বিভাগ বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের ইঞ্জিন ফুয়েল সিস্টেম, ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার, হাইড্রোলিক সিস্টেম, এয়ার কন্ডিশনিং, ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ অংশের মান যাচাই ও পাওয়ার অ্যাসুরেন্স চেক সম্পন্ন করেছে।

নির্ধারিত মেইনটেনেন্স প্রোগ্রাম অনুসরণ

বিমান জানিয়েছে, তাদের প্রতিটি উড়োজাহাজের রক্ষণাবেক্ষণ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ (Civil Aviation Authority of Bangladesh) অনুমোদিত ‘এয়ারক্রাফট মেইনটেনেন্স প্রোগ্রাম’ অনুসারে হয়। এতে প্রতিটি কাজের সময়সীমা, পদ্ধতি এবং মানের নির্ধারিত নির্দেশনা রয়েছে। প্রতিটি কাজ শেষ হলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী টাস্ক কার্ডে স্বাক্ষর করেন এবং পরবর্তীতে কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স টিম কর্তৃক যাচাই করা হয়।

রিয়েল টাইম মনিটরিং ও প্রযুক্তিগত সমর্থন

এছাড়াও বিমানের ‘এয়ারক্রাফট হেলথ ম্যানেজমেন্ট’ এবং ‘ইঞ্জিন হেলথ ম্যানেজমেন্ট’ সিস্টেমের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণ কন্ট্রোল সেন্টার এবং কেন্দ্রীয় প্রকৌশল শাখা সার্বক্ষণিকভাবে প্রতিটি উড়োজাহাজ মনিটর করে। ফলে যেকোনো সমস্যা আগেভাগে চিহ্নিত করে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।

দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট

সম্প্রতি ভারতের গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার লন্ডনগামী বিমান উড্ডয়নের পরপরই একটি আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়। এতে ২৪২ জনের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই নিহত হন।

বিমান বাংলাদেশ জানায়, ভবিষ্যতে বোয়িং কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত যেসব নির্দেশনা দেওয়া হবে, তা দ্রুত বাস্তবায়নে তাদের প্রকৌশল বিভাগ প্রস্তুত রয়েছে।