বগুড়া (Bogra) সদর উপজেলার বড়কুমিড়া হিন্দুপাড়া এলাকার ৯০ বছর বয়সী বিমলা রানী (Bimala Rani) জীবনের শেষপ্রান্তে এসে ঠাঁই পেলেন না নিজের তিন সন্তানের ঘরে। একসময় সুখে থাকা বিমলা রানীর জীবন এখন চলছে দুর্বিষহ অবস্থায়। খাবার, আশ্রয় কিংবা ভালোবাসার অভাবে দিন কাটছে অনাহারে, কখনো বাড়ির কোণে, কখনো বাঁশঝাড়ের নিচে।
সন্তানদের অবহেলায় মানবেতর জীবন
হরিপদ চন্দ্র (Haripada Chandra)র স্ত্রী বিমলা রানীর তিন ছেলে—দুজন কাঠমিস্ত্রি ও একজন দর্জি হলেও কেউই দেখাশোনা করেন না মায়ের। প্রতিদিন সকালে তাকে বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে ফেলে আসা হয়। দুপুর গড়িয়ে গেলেও মেলে না এক ফোঁটা পানিও। সর্বশেষ সোমবার রাতে মেজো ছেলে লব সরকার (Lob Sarkar) নিজ বাড়ি থেকে বের করে দেন মাকে। স্থানীয়দের চাপে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে ফের তাকে বের করে দেওয়া হয়।
মানবিক উদ্যোগে সেনাবাহিনী
বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা আকাশের নিচে খা খা রোদে পড়ে ছিলেন বিমলা রানী। স্থানীয়দের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী (Bangladesh Army)। সেনাবাহিনীর সদর ক্যাম্পের লেফটেন্যান্ট আল ফাহাদ (Lieutenant Al Fahad) তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন।
বিমলা রানীকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে খাবার কিনে দেন এবং পরে ছেলেদের ঘরে তুলে দেন। এ সময় লেফটেন্যান্ট ফাহাদ বৃদ্ধা মাকে নিজ হাতে খাবার খাওয়ান এবং ছেলেদের সতর্ক করেন। পরিবার ভুল স্বীকার করে তাকে আবার ঘরে ফিরিয়ে নেয়। তিনি জানান, “মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রয়োজনে আর্থিক সহায়তাও করব।”
প্রতিবেশীদের কৃতজ্ঞতা
বৃদ্ধা বিমলার এমন মানবেতর অবস্থায় সেনাবাহিনীর সহানুভূতিশীল ভূমিকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। একই সঙ্গে তারা বিমলার ছেলেদের অবহেলার চিত্রও তুলে ধরেছেন।