ঢাকা দক্ষিণ সিটির ইঞ্জিনিয়ার খাইরুল বাকেরের বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (Dhaka South City Corporation)-এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খাইরুল বাকের (Khairul Baker) এর বিরুদ্ধে ৬০০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party)-এর মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (Sarjees Alam)। বুধবার (১৮ জুন) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি পোস্টে এসব তথ্য জানান তিনি।

বেনামি সম্পদের চিত্র

সারজিস আলম তার পোস্টে দাবি করেন, খাইরুল বাকেরের নামে ও বেনামে রয়েছে প্রায় ৬০০ কোটি টাকার সম্পদ। এছাড়া এলাকাবাসীর মতে, তার মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। তিনি জানান, খাইরুল বাকের তার ৫ ভাই, ২ ছেলে এবং স্ত্রী জেবুন নাহার (Jebun Nahar)-এর নামে ঢাকাসহ নরসিংদী (Narsingdi)-তে রয়েছে অন্তত ১৩টি বাড়ি।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও বিতর্ক

সারজিস আরও জানান, ৫ আগস্টের আগে খাইরুল বাকের সামাজিক মাধ্যমে একাধিক পোস্ট ও মন্তব্যের মাধ্যমে “ফ্যাসিস্ট সরকার”কে রক্ষায় এবং ছাত্র আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে কাজ করেছেন। খাইরুল বাকের একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার বাবা মিন্নত আলী ছিলেন একজন খেয়ানৌকার মাঝি ও কুলি। ২০০১ সালে তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদানের পর থেকেই তার ও তার পরিবারের আর্থিক অবস্থার নাটকীয় পরিবর্তন ঘটে।

দুর্নীতি ও কমিশন বাণিজ্যের অভিযোগ

সারজিসের দাবি, খাইরুল বাকের প্রকল্প অনুমোদনে ৫ শতাংশ হারে কমিশন গ্রহণ করতেন। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি ছিলেন বেলাবো (Belabo) ও মনোহরদী (Monohardi) উপজেলার আওয়ামী লীগ (Awami League)-এর অর্থদাতা। সাবেক শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন (Nurul Majid Mahmud Humayun) এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল তার, এবং এই মন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারণায় কোটি কোটি টাকা দিয়ে অবৈধ সহায়তা দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন সারজিস।

ছাত্রলীগে খাইরুলের অতীত

ছাত্রজীবনে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) (CUET)-এর শহীদ তারেক হুদা হল শাখা ছাত্রলীগ (Chhatra League)-এর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খাইরুল বাকের। পরে তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।

সারজিস অভিযোগ করেন, এমন একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা এখনও স্বপদে বহাল রয়েছেন এবং এখন আবার অন্য দলের সহযোগিতায় মন্ত্রণালয়ে পদোন্নতির চেষ্টাও করছেন। তার ভাষায়, “এই ডাকাতদের চেয়ারে বসিয়ে রেখে কিভাবে সংস্কার সম্ভব?”