বিএনপি (BNP) নেতা ইশরাক হোসেন (Ishraq Hossain)-এর সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ বলে অভিহিত করেছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া (Asif Mahmud Sajib Bhuiyan)। এক বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ইশরাককে ভুল পথে পরিচালিত করা হচ্ছে এবং রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে।
শপথ গ্রহণ নিয়ে জটিলতা
আসিফ মাহমুদ জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (Dhaka South City Corporation) মেয়র হিসেবে ইশরাকের শপথ গ্রহণের জন্য ফাইল তৈরি করা হলেও, বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় আইন মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে তা বন্ধ রাখতে হয়। ২৬ মে ছিল শপথগ্রহণের নির্ধারিত শেষ দিন, কিন্তু বিচারাধীন থাকার কারণে শপথ সম্ভব হয়নি এবং পরবর্তীতে মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
সংঘাত না, আলোচনার আহ্বান
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “ইশরাক হোসেনকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথে আসা উচিত। জনগণের স্বার্থে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।” তিনি আরো বলেন, সরকার ও বিএনপির মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে, এই সম্পর্ক যাতে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য ইশরাককে দায়িত্বশীল হতে হবে।
সিটি করপোরেশনের অবস্থান
আসিফ অভিযোগ করেন, শপথ না নিয়েও ইশরাক সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এবং কর্মকর্তাদের কাজে বাধা দিচ্ছেন, যা প্রচলিত আইনে অপরাধ। তিনি বলেন, “মেয়রের চেয়ারে বসা, কর্মকর্তাদের কাজে বাধা প্রদান—এসব আইনগত অপরাধ।” এসব বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ইশরাকের পাল্টা অভিযোগ
অন্যদিকে, ইশরাক অভিযোগ করেন, জনগণের জরুরি সেবা চালু রাখলেও প্রশাসনের বিভিন্ন কৌশলে তার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “নির্বাচিত প্রতিনিধিদের উপেক্ষা করে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘনের শামিল।”
রাজনৈতিক বিতর্ক এবং আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
আসিফ জানান, বিএনপির একাংশ ইশরাকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিও উঠেছিল। এই বিষয়ে উসকানি দিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি ইশরাককে গণ-অভ্যুত্থানের অংশীজন হিসেবে দেখি। তাকে রাজনৈতিকভাবে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।” আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান সম্ভব বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।
স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও পরবর্তী পদক্ষেপ
স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রসঙ্গে আসিফ বলেন, “সিটি করপোরেশনগুলোতে নির্বাচন দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। জনগণের সেবা বিঘ্নিত হওয়ায় দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।” তিনি জানান, ৪০ শতাংশ নাগরিক সেবা কমে গেছে এবং সরকার সর্বোচ্চ ধৈর্য নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে।
আসিফ মাহমুদ বলেন, “বিএনপির উচিত এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। সরকার আলোচনার জন্য সবসময় প্রস্তুত, তবে এ আন্দোলন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।” তিনি প্রত্যাশা করেন, সকল পক্ষ দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।