কারাগারে প্রভাবশালী রাজনীতিক নুর মোহাম্মদ মণ্ডল, দুর্নীতির মামলায় সম্পত্তি ক্রোক

রংপুরের পীরগঞ্জ (Pirganj) উপজেলার সাবেক এমপি নুর মোহাম্মদ মণ্ডল (Nur Mohammad Mondol)কে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি রাজনীতির অঙ্গনে জাতীয় পার্টি, বিএনপি (BNP) ও আওয়ামী লীগ (Awami League)—এই তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলে সক্রিয় ছিলেন। বারবার দল বদলানোয় স্থানীয়দের কাছে তিনি ‘ডিগবাজি নেতা’ নামে পরিচিত।

বারবার দলবদলের ইতিহাস

নুর মোহাম্মদ প্রথমে জাতীয় পার্টির হাত ধরে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং দলটি থেকে দুবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে জাতীয় পার্টির পতনের পর তিনি বিএনপিতে যোগ দেন এবং উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর আবার দল পরিবর্তন করে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং দলটির প্রভাবে ফের উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন।

দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের অভিযোগ

দুর্নীতি দমন কমিশন (Anti-Corruption Commission) -এর রংপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক রুবেল হোসেন জানান, নুর মোহাম্মদের মালিকানাধীন পীরগঞ্জ এলাকায় ৩১৩০.৭৩ একর জমিতে ‘আনন্দনগর’ নামে একটি বিশাল পিকনিক স্পট ও বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে, যা তিনি বন বিভাগের জমি দখল করে তৈরি করেছেন।

তাঁর নামে ৮টি ব্যাংক হিসাবে বিপুল অর্থ গচ্ছিত রয়েছে এবং প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, যার উৎস বৈধ নয়। ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করা হয়, যেখানে অভিযোগ ছিল সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের।

আদালতের নির্দেশ ও কারাদণ্ড

গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রংপুর (Rangpur) সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে তোলা হলে তার আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। কিন্তু বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির (Fazle Khoda Md. Nazir) জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত আনন্দনগর পিকনিক স্পট, আটটি ব্যাংক হিসাব এবং নয় কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেন।