শরীয়তপুর (Shariatpur) জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন (Mohammad Ashraf Uddin) এবং ভিডিওতে দেখা সেলিনা ইসলাম লিজা (Selina Islam Liza) অবশেষে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। উভয় পক্ষ থেকে এসেছে বিস্ফোরক দাবি ও পাল্টা অভিযোগ, যা ঘটনাটিকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে।
কীভাবে শুরু হলো ঘটনা?
শুক্রবার (২০ জুন) সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর ভিডিও ও চারটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি শরীয়তপুর জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
জানা গেছে, ভিডিওতে দেখা নারী টাঙ্গাইল (Tangail) সদরের বাসিন্দা এবং মিরপুর (Mirpur) এলাকার মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের স্ত্রী। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন হীরা, লিজার স্বামীর বড় বোনের জামাই, যার মাধ্যমে তাদের মধ্যে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
লিজার অভিযোগ
লিজা বলেন, পারিবারিক সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে জেলা প্রশাসক তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কোরআন শরিফে হাত রেখে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যার ভিত্তিতে তিনি তার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স করেন। পরবর্তীতে সম্পর্ক পাত্তা না দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইলারের মতো আচরণ করেন। লিজা দাবি করেন, তিনি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
ডিসির পাল্টা বক্তব্য
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন বলেন, লিজা তার আত্মীয়। এক পর্যায়ে লিজা ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে তাকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে তাকে অর্থ দিতে হতো, যা পূবালী ব্যাংক (Pubali Bank) মারফত পাঠানো হয়েছে, তার প্রমাণ রয়েছে। একপর্যায়ে ওই নারী তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে বলেন এবং বিয়েতে রাজি না হলে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করেন।
মধ্যস্থতার চেষ্টাও ব্যর্থ
শরীয়তপুর জেলা জজ আদালত (Shariatpur District Judge Court)–এর এক আইনজীবী জানান, দুই পক্ষের মধ্যে গত দুই মাস ধরে মধ্যস্থতার চেষ্টা চলছিল। তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিলেও নারী পক্ষ মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে এবং ৩০ জুনের মধ্যে তা পরিশোধের আল্টিমেটাম দেয়। এর মাঝেই ভিডিও ভাইরাল হয়।
বর্তমান অবস্থা
উল্লেখ্য, মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুর জেলার জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা এবং এর আগে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ও নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের পরিচালক ছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাতেই ওই ঘটনার পর তিনি শরীয়তপুর ত্যাগ করেন। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তিনি বর্তমানে ছুটিতে আছেন। তবে তার অনুপস্থিতিতে কারা দায়িত্ব পালন করছেন, সে বিষয়ে কোনো অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া যায়নি।