প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক ক্ষমতা সীমিত করা উচিত নয়: সালাহউদ্দিন আহমেদ

প্রধানমন্ত্রীর সাংবিধানিক ক্ষমতা সীমিত করার উদ্যোগের বিরোধিতা করে মন্তব্য করেছেন সালাহউদ্দিন আহমেদ (Salah Uddin Ahmed)। রবিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Foreign Service Academy)–তে অনুষ্ঠিত জাতীয় ঐক্যমত্য সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর হাত-পা বেঁধে দেওয়া উচিত নয়। যদি এক্সিকিউটিভের সর্বক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা তৈরি করি, তবে তারা দায়িত্ব কীভাবে পালন করবে?”

বিএনপি (BNP)–র স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন এবং সংবিধানের পঞ্চম ও পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পর্কেও দলের অবস্থান স্পষ্ট। “আমরা সংবিধানের মূলনীতির জায়গায় আছি, যেখানে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম এবং মহান আল্লাহর ওপর আস্থা রয়েছে, কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা নেই,”— বলেন সালাহউদ্দিন।

তিনি আরও জানান, “পঞ্চদশ সংশোধনীর পূর্বাবস্থায় ফেরার প্রস্তাব এবং ‘গণতন্ত্র’ শব্দটি একাধিকবার ব্যবহারের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে আমাদের আপত্তি নেই।” তবে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ‘ঐক্যমত হয়েছে’ বলা যাবে না বলেও তিনি সতর্ক করেন।

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদের সীমা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যদি জাতীয় ঐক্যমতে সিদ্ধান্ত হয় যে একজন প্রধানমন্ত্রী ১০ বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তবে দলীয়ভাবে আমরা সে বিষয়ে অবস্থান জানাবো।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র কাঠামো গড়ে উঠুক—যেখানে এক্সিকিউটিভ, লেজিসলেচার ও জুডিশিয়ারির মাঝে ভারসাম্য থাকবে। এর জন্য দরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন, যা কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে হতে হবে। পাশাপাশি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, প্রকৃত স্বাধীন বিচারব্যবস্থা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।”

সংবিধানে স্বৈরাচারী প্রবণতা ঠেকানো নিয়েও সতর্ক করেন তিনি। “একজন প্রধানমন্ত্রীকে সীমিত করলেই কি ভবিষ্যতে আর কোনো সাংবিধানিক একনায়কতন্ত্র হবে না? সংসদের ভেতর দিয়েও তো স্বৈরাচার আসতে পারে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র কাঠামোই চূড়ান্ত সমাধান।”

শেষে তিনি বলেন, “আমরা চাই এমন একটি প্রস্তাবে একমত হই, যেখানে কেউ সীমাহীন মেয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে না পারেন, আবার কোনো একনায়কতন্ত্রও প্রতিষ্ঠা না হয়।”