সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা (KM Nurul Huda)–র গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়ে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও বিশিষ্ট নাগরিক ডা. জাহেদ উর রহমান (Dr. Zahedur Rahman)। তিনি বলেছেন, “মৃত্যুদণ্ড যদি কোনো শাস্তি হয়, তবে তা জনাব নুরুল হুদার জন্য ছোট শাস্তি হবে।”
২০১৮ সালের নির্বাচনকে ‘ধ্বংসাত্মক’ আখ্যা
একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টকশোতে অংশ নিয়ে ডা. জাহেদ বলেন, “২০১৮ সালের ভয়ঙ্কর নির্বাচন এবং আগের রাতে ভোট ডাকাতির ঘটনায় নুরুল হুদা দায়ী ছিলেন। বহু আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল।”
তিনি জানান, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য থাকাকালে তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তার ভাষায়, “একটি রাষ্ট্রকে তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ধ্বংস করার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ২০১৮ সাল।”
রাষ্ট্র ও গণতন্ত্র ধ্বংসের অভিযোগ
নুরুল হুদার ভূমিকার সমালোচনা করে ডা. জাহেদ বলেন, “তিনি কেবল একজন ব্যক্তি নন, বরং এমন একজন যিনি এই রাষ্ট্রের গণতন্ত্র, নির্বাচনব্যবস্থা ও কোটি মানুষের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করেছেন। তিনি শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)–র সহযোগী হিসেবে যেভাবে কাজ করেছেন, তা ক্ষমার অযোগ্য।”
মানবাধিকারের লঙ্ঘনের বিরোধিতা
তবে গ্রেপ্তারের পর নুরুল হুদার সঙ্গে দুর্ব্যবহার প্রসঙ্গে ডা. জাহেদ বলেন, “ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে তাকে পুলিশের সামনে জুতার মালা পরানো হয়েছে, জুতাপেটা করা হয়েছে—এটি সম্পূর্ণ অমানবিক ও বর্বর আচরণ। সংবিধানের ৩৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কাউকে অবমাননাকর বা লাঞ্ছনাকর শাস্তি দেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আদালত প্রাঙ্গণে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে এমন আচরণ আগেও হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত ছিল। অপরাধী হলেও তার বিচার আইনের মাধ্যমেই হওয়া উচিত, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।”
ঘটনার তদন্ত দাবি
ডা. জাহেদ অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার দাবি করে বলেন, “ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে কারা এই কাজগুলো করেছে। এটি অপরাধ, এবং সরকারের উচিত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা। সেই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার জন্য জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।”