ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অপরিহার্য: গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) এর গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর (Dr. Ahsan H. Mansur) বলেছেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জরুরি।

গুগল পে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গভর্নরের বক্তব্য

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকা (Dhaka) শহরের একটি হোটেলে ‘গুগল পে’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, “ব্যাংক খাত অবশ্যই ঠিক করতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আর কখনও পূর্বের অবস্থায় ফিরে না যায়।”

তিনি আরও বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ‘রিস্ক বেজড’ সুপারভিশন চালু করা হবে। ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকে নানা ধরনের তদারকি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে।

ব্যাংক মার্জার ও আমানতকারীদের আশ্বাস

গভর্নর জানান, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে কিছু ব্যাংকের মধ্যে মার্জারের প্রয়োজন হবে। “আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই কয়েকটি ব্যাংকের মার্জার সম্পন্ন করা যাবে। তবে আমানতকারীদের কোনও ক্ষতি হবে না। আপনারা যে ব্যাংকে আছেন সেখানেই থাকুন, আপনাদের স্বার্থ নিশ্চিত করা হবে।”

মূল্যস্ফীতি ও মুদ্রানীতির বিষয়ে মন্তব্য

তিনি বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বলেছিলাম মূল্যস্ফীতি অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আসবে। সেটা এখন নিয়ন্ত্রণের দিকে আছে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরেকটু সময় লাগবে।”

বাংলাদেশের মুদ্রার মান নির্ধারণের বিষয়ে গভর্নর স্পষ্ট করে বলেন, “বাংলাদেশের টাকা কতটা মূল্যবান হবে, সেটা ঢাকাতেই ঠিক হবে। কোনও যৌক্তিক কারণ ছাড়া এক পয়সাও অবমূল্যায়ন হবে না। এটা আমার প্রতিশ্রুতি ছিল এবং সেটি আমরা রেখেছি। দুবাইয়ে বসে টাকার মান নির্ধারণ করার সময় শেষ।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি দেশে আবারও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, তাহলে সেই পুরনো সময় ফিরে আসবে। মধ্যস্বত্বভোগীরা সুযোগ নেবে, বাজার নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে অন্যের হাতে। আমরা সেটি হতে দিতে পারি না।”

বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও বিদেশি অংশগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য

গভর্নর বলেন, “বিনিয়োগ আসবে, কারণ আমরা বকেয়া পরিশোধ করেছি। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ একটি উন্মুক্ত ক্ষেত্র হয়ে উঠবে।”

দেশের বন্দর ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের পোর্ট নিয়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। যদি বিদেশিরা আমাদের বন্দর পরিচালনা করেন, তাহলে আগামী দশ বছরে আমরা তাদের প্রযুক্তি শিখে অন্য দেশের পোর্ট পরিচালনাও করতে পারবো।”