খুলনার ৮ পুলিশ কর্মকর্তা ও একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে

খুলনা (Khulna)-র ৮ পুলিশ কর্মকর্তাসহ আওয়ামী লীগ (Awami League) ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গুম, নির্যাতন ও অপহরণের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি (Sajidul Islam Bappi)। মামলায় মোট ২৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক শীর্ষ ব্যক্তিরা

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক (Talukder Abdul Khaleque), সাবেক সংসদ সদস্য শেখ জুয়েল, এস এম কামাল, বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সালাম মোর্শেদী, নারায়ণচন্দ্র চন্দ, শেখ হেলাল, আক্তারুজ্জামান বাবু, রাশীদুজ্জামান মোড়ল, এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই সেখ সোহেল

পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন খুলনার সাবেক পুলিশ কমিশনার মোজাম্মেল হক, উপ-কমিশনার সোনালী সেন, এডিসি গোপিনাথ কানজিলাল, ডিবির নুরুজ্জামান, লবনচরা থানার ওসি মনির, খুলনা সদর থানার এসআই হাসান, সোনাডাঙ্গা থানার এসআই সুমন মন্ডল ও সাবেক ওসি মমতাজ।

অভিযুক্ত অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সাইফ, যুবলীগ নেতা শেখ শাহাজালাল সুজন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক বিভাগের এডিডি জহিরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর এবং আওয়ামী লীগ নেতা জগলুল কাদের।

অপহরণ ও নির্যাতনের বিস্তারিত বিবরণ

২০২৪ সালের ৮ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ (Anti-Discrimination Student Movement) কর্মসূচিতে অংশ নিতে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানা (Sonadanga Police Station)-এ পৌঁছালে বাপ্পি ও তার সঙ্গী মেজবাহ উদ্দিনকে মুখোশধারী ও সশস্ত্র দল একটি ইজিবাইক থেকে নামিয়ে নেয়। এরপর বাপ্পিকে চোখ, মুখ ও হাত বেঁধে একটি প্রাইভেট কারে তুলে অপহরণ করা হয়।

সাজিদুল ইসলাম বাপ্পি জানান, তাকে অজ্ঞাত একটি ঘরে আটকে রেখে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়, খাবার ও পানি দেওয়া হয়নি এবং মূল্যবান জিনিসপত্র জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেওয়া হয়। দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা পর রাতে খুলনার আড়ংঘাটা বাইপাস মোড় (Arongghata Bypass Mor) এলাকার একটি বাগানে তাকে ফেলে রাখা হয়, যেখান থেকে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।

জাতীয় সংকটের চিত্র তুলে ধরলেন বাপ্পি

বাপ্পি আরও বলেন, “পতনশীল আওয়ামী লীগ সরকার দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গসংগঠনগুলোকে ব্যবহার করে সাধারণ জনগণের ওপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। এর ফলে ইতোমধ্যে ১৫০০ জন নিহত এবং ২৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছে।”

তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কো-অর্ডিনেটর বরাবর অভিযোগ দাখিল করেছেন এবং ন্যায়বিচারের আশায় আবেদন করেছেন।