২০২৪ সালের পর রাজনীতিতে নতুন বাস্তবতায় উদ্ভূত নানা দল ও জোটের প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীর (Anis Alamgir)। সম্প্রতি ‘মানচিত্র’ শীর্ষক ইউটিউব টকশোতে আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এখন সবাই নিজেকে রাজা মনে করছে, রাজনীতিতে প্রবেশ করে দল খুলে বসেছে। এসব দলের কেউই আর চাঁদা দিচ্ছে না, নিজেরাই নিজেদের কথা বলছে।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না (Manzurul Alam Panna)।
ড. ইউনূসের সঙ্গে কারা?
আনিস আলমগীর বলেন, সবাইকে ‘কিংস পার্টি’ বলা যাবে না। কারণ ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) যখন নিজেই ঘোষণা দেন যে তিনি একটি দলের প্রতি দুর্বল এবং তাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান, তখন এটি স্পষ্ট হয় যে, এনসিপি (NCP)-ই তার দল।
তবে, তিনি উল্লেখ করেন, “এনসিপির বাইরে ড. ইউনূসের যদি আরেকটি দল থাকে, সেটা হচ্ছে জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami)।”
১৪৭ দলের আবেদন ও ‘আগাছা’র প্রসঙ্গ
আলোচনায় উঠে আসে নির্বাচন কমিশনে ১৪৭টি দলের আবেদন নিয়ে প্রশ্ন। এর জবাবে আনিস আলমগীর বলেন, আগে এসব ‘আগাছা’ দলগুলো আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করত, এখন তারা ইউনূসকে সহায়তা করছে। এসব দলের কাজ হচ্ছে কেবল সংখ্যা বাড়ানো ও প্রতিপত্তি দেখানো।
তিনি বলেন, “যদি নির্বাচনের আগে ড. ইউনূসের ইচ্ছা থাকে, তবে এদের অর্থও দিতে পারেন। তবে মনে হয় টাকা নয়, প্রতিপত্তির জন্যই এই দলগুলো রাস্তায় নেমেছে।”
আরপিও সংশোধন ও ‘কিংস পার্টির’ প্রভাব
আনিস আলমগীর জানান, নির্বাচনী আইন আরপিও-তে পরিবর্তন এনে এসব রাজনৈতিক দলের জন্য মাঠ সহজ করে দেওয়া হয়েছে। আগে যেখানে নিবন্ধনের জন্য কঠোর শর্ত ছিল, এখন তা অনেক সহজ করে দেওয়া হয়েছে, যা সম্ভব হয়েছে ড. ইউনূসের সমর্থিত দলগুলোর চাপে।
আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সংশয়
বর্তমানে যদি নির্বাচন হয় তবে তা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবে কি না, এমন প্রশ্নে আনিস আলমগীর বলেন, “এই নির্বাচন আন্তর্জাতিক তো দূরের কথা, দেশের ভেতরেও গ্রহণযোগ্য হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের একটি অবস্থান আছে। বিচার করতে হলে করা হোক, কিন্তু বিচারের আগেই যদি তাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখা হয়, সেটা অন্যায় হবে।”
আইনের শাসনের প্রশ্নে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগকে সমর্থন করার প্রয়োজন নেই, কিন্তু ন্যায়ের জায়গায় থাকতে হবে। আইন সবার জন্য সমান হতে হবে।”