পিলখানা হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক নেতাদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিশন: ফজলুর রহমান

২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড (Pilkhana Massacre) নিয়ে গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে তৎকালীন কিছু রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে।

বুধবার (২৫ জুন) রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি (Science Laboratory) এলাকার বিআরআইসিএম (BRICM) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান (Maj Gen (Retd.) A.L.M. Fazlur Rahman) এই তথ্য জানান।

রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও আলামত ধ্বংসের অভিযোগ

ফজলুর রহমান বলেন, “হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কিছু রাজনৈতিক নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনার পর আলামত ধ্বংসের চেষ্টাও চালানো হয়েছিল।”

ঘটনার কারণ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা

তদন্ত কমিশনের দাবি, হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ আড়াল করতে ‘চাল-ডাল কর্মসূচি’, ‘জঙ্গিবাদের সংশ্লিষ্টতা’, এবং ‘মাদ্রাসা শিক্ষিত জনবল’ নিয়োগের প্রচার চালানো হয়। এতে ঘটনার আসল দায় এড়ানোর চেষ্টা হয়েছে।

নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যর্থতা

কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী, “ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী (Law Enforcement) ও গোয়েন্দা সংস্থা (Intelligence Agency) সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় ছিল। সময়মতো সামরিক ব্যবস্থা নেওয়া হলে প্রাণহানি কমানো যেত।”

সাক্ষ্যগ্রহণের অগ্রগতি

ফজলুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত:
– ৬ জন শহীদের পরিবারের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে
– ১৫ জন বেঁচে যাওয়া কর্মকর্তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে
– আরও ৫০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে

এছাড়া ৮ জন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে:
– ৩ জন কারাগারে থেকে
– ৩ জন সরাসরি উপস্থিত হয়ে
– ২ জন বিদেশ থেকে ইমেইলের মাধ্যমে

আওয়ামী লীগ (Awami League) নেতা মির্জা আজম (Mirza Azam) ও জাহাঙ্গীর কবির নানক (Jahangir Kabir Nanak) চিঠির মাধ্যমে লিখিত জবানবন্দি দিয়েছেন।

আরও ১৪ জনকে সাক্ষ্যের জন্য ডাকা

কমিশন সূত্রে জানা যায়, সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আরও ১৪ জন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)
মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিক (Maj Gen Tarique Ahmed Siddique)
ফজলে নূর তাপস (Fazle Noor Taposh)
শেখ সেলিম (Sheikh Selim)

কমিশনের দাবি অনুযায়ী, পূর্ণ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাম প্রকাশ না করলেও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।