যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর নিউইয়র্ক সিটি (New York City)-তে প্রথমবারের মতো একজন মুসলিম মেয়র হতে যাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণ জোহরান মামদানি (Zohran Mamdani)। ৩৩ বছর বয়সী এই প্রগতিশীল নেতা ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক নির্বাচনে এগিয়ে আছেন এবং তার সম্ভাব্য জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে উঠেছে।
ইতিহাস গড়ার পথে জোহরান মামদানি
বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাথমিক নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের প্রায় ৯৩% ভোট গণনা শেষে মামদানি পেয়েছেন ৪৪% ভোট, যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাক্তন মেয়র অ্যান্ড্রু কুওমো (Andrew Cuomo) পেয়েছেন ৩৬.৪%। এ প্রেক্ষিতে, মামদানির জয় প্রায় নিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে।
কে এই জোহরান মামদানি?
উগান্ডার কাম্পালা (Kampala)-তে জন্ম নেওয়া মামদানি মাত্র সাত বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। পড়াশোনা করেন ব্রঙ্কস হাই স্কুল অব সায়েন্স (Bronx High School of Science) এবং পরবর্তীতে বোডোইন কলেজ থেকে আফ্রিকানা স্টাডিজে ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানেই তিনি ‘স্টুডেন্টস ফর জাস্টিস ইন প্যালেস্টাইন’-এর ক্যাম্পাস চ্যাপ্টারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
ফিলিস্তিন ইস্যুতে স্পষ্ট অবস্থান
কাজ করে গেছেন গাজার অধিকার রক্ষায়, কলেজ জীবন থেকেই ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এই স্পষ্ট ও সাহসী অবস্থানের কারণেই তিনি প্রগতিশীল ভোটারদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
ধর্মীয় অনুশাসনে চলা এক উদাহরণ
ধর্মপরায়ণ এই মুসলিম তরুণ নিয়মিত মসজিদে যান এবং ইসলামি জীবনাচারে বিশ্বাসী। নিউইয়র্কবাসীর কাছে তার এই জীবনধারা এক আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছে।
পারিবারিক পরিচয়
মামদানির স্ত্রী একজন সিরিয়ান শিল্পী। তার মা মীরা নায়ার (Mira Nair) বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এবং বাবা মাহমুদ মামদানি (Mahmood Mamdani) একজন খ্যাতিমান অধ্যাপক, যিনি বর্তমানে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। উভয়েই হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির (Harvard University) প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
রাজনীতিতে প্রবেশ ও জনপ্রিয়তা
রাজনীতিতে যোগদানের আগে মামদানি ছিলেন একজন আবাসন পরামর্শদাতা। কুইন্স (Queens)-এ নিম্ন আয়ের বাসিন্দাদের উচ্ছেদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। মেয়র নির্বাচনে তার সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক রূপরেখা ডেমোক্রেট ভোটারদের মন জয় করেছে। নিউইয়র্কবাসীর মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জনের কারণে, তার জয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।