এনবিআর সংস্কার আন্দোলনে আওয়ামী সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের ইন্ধনের ইঙ্গিত অর্থ উপদেষ্টার

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR – National Board of Revenue) সংস্কার নিয়ে চলমান আন্দোলনের পেছনে অতীত সরকারের সুবিধাভোগী কিছু ব্যবসায়ীর ইন্ধন থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ (Salehuddin Ahmed)। বুধবার (২৫ জুন) সচিবালয়ে (Secretariat) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ব্যবসায়ীদের ইন্ধনের সন্দেহ

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “এনবিআর সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। অতীতে এনবিআরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ছিল না। কিছু ব্যবসায়ী বারবার সুবিধা পেয়েছেন, অথচ সৎ ব্যবসায়ীরা পায়নি। কাজেই, এই সংস্কারের প্রতিবাদে কিছু ব্যবসায়ী গোপনে ইন্ধন দিতে পারেন—এটা আমার অনুমান।”

আন্দোলনের কারণ ও কর্মকর্তাদের অভিযোগ

এনবিআর কর্মকর্তারা দাবি করছেন, প্রস্তাবিত সংস্কারে এনবিআরকে নীতি ও বাস্তবায়ন—দুটি ভাগে আলাদা করা হলে প্রশাসন ক্যাডারের (Admin Cadre) আধিপত্য বাড়বে। বর্তমানে আবদুর রহমান খান (Abdur Rahman Khan) প্রশাসন ক্যাডার থেকে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার নিয়মিত আগমন-প্রস্থান চলছে পুলিশ পাহারায়। এনবিআরের প্রধান কার্যালয় আগারগাঁও (Agargaon)-এ আন্দোলন, কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।

আলোচনার আহ্বান ও প্রত্যাখ্যান

অর্থ উপদেষ্টা ২৬ জুন বিকেল ৫টায় এনবিআর সংশ্লিষ্ট ক্যাডার প্রতিনিধিদের আলোচনায় ডাকলেও, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ (NBR Reform Unity Council) সেই আলোচনায় অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনের মতে, আগে যে আলোচনায় মাত্র ১০ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল, সেটি ছিল অপমানজনক এবং পরবর্তীতে উপদেষ্টা সংবাদ মাধ্যমে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে ভুল তথ্য দেন।

ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ—হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার (Hasan Muhammad Tarek Rikabdar) এবং মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা (Monalisa Shahreen Sushmita) সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আলোচনা নয়, দাবি আদায়ের জন্য ২৮ জুন থেকে লাগাতার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি শুরু হবে।

সরকারের অবস্থান

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “কর্মস্থলে অনুপস্থিতি সরকারি চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থী। সমস্যার কোনো সমাধান আলোচনা ছাড়া সম্ভব নয়।” তিনি আরও আশ্বাস দেন, সংস্কারের ফলে এনবিআর কর্মকর্তাদের ক্যারিয়ারে উন্নয়ন ঘটবে, তাদের প্রমোশন ও মর্যাদা আরও বাড়বে।