রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ থাকা নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শেখ রেজাউল করিম বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)। পুলিশ সদর দপ্তরের এক অফিস আদেশে তাকে ২৪৫ জন নির্বাচিত প্রার্থীর একজন হিসেবে রাজশাহীর সারদা-তে পাঠানো হয়েছে।
ছাত্র রাজনীতি থেকে পুলিশের চাকরি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ-এর ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র রেজাউল করিম নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের শাহ মখদুম হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত বছরের ১৬ জুলাই শহীদ জিয়াউর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় সামনের সারিতে দেখা যায় তাকে। ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও রয়েছে।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ ও পুলিশের আদেশ
২০২৪ সালের প্রাথমিকভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত এসআই (নিরস্ত্র) প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের ভিত্তিতে শেখ রেজাউল করিমসহ মোট ২৪৫ জনকে এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়েছে। শেখ রেজাউলের নাম তালিকায় ১০৭ নম্বরে রয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণকালীন বা পরবর্তীতে প্রার্থীর প্রদত্ত তথ্য মিথ্যা প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী চাকরিচ্যুতি বা বরখাস্ত করা হবে।
পুরনো অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের প্রতিক্রিয়া
শেখ রেজাউলের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, সিট বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্টের পর শাহ মখদুম হলের গেটে টাঙানো এক তালিকায় ‘ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী’ হিসেবে তাকে ৪ নম্বরে রাখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেজাউলের পুলিশের চাকরি বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা চেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রশাসনের অবস্থান
শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট মাহবুবুর রহমান জানান, ৫ আগস্টের আগে শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ তুলেছেন, তার প্রমাণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে জমা দেওয়া হয়েছে।
পরিবার ও প্রশাসনের বক্তব্য
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বাদঘাটা এলাকায় অবস্থিত শেখ রেজাউলের গ্রামের বাড়িতে যোগাযোগ করলে তার মা রিজিয়া খাতুন জানান, রেজাউলের রাজনীতি বা আন্দোলনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল ডিআইজি ব্যারিস্টার জিল্লুর রহমান জানান, “আমাদের কাজ প্রশিক্ষণ দেওয়া। নিয়োগ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। অভিযোগ থাকলে সদর দপ্তরই ব্যবস্থা নেবে।”
পুলিশ হেড কোয়ার্টার্সের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, “যেকোনো পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা গুরুত্বসহকারে দেখা হয় এবং প্রয়োজনে তদন্ত করা হয়।”