একটি বেসরকারি এয়ারলাইনসের (Airlines) পাইলটদের বিরুদ্ধে অর্থপাচার, চোরাচালান ও সহকর্মী নারী কর্মীদের ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠে এসেছে। এসব অপরাধে অভিযুক্ত পাইলটদের সহযোগিতা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, পাইলট ইউনিয়নের নেতা ও সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কিছু সদস্য—এমন চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের (Zulkarnain Sayer)।
হ্যাকার গ্রুপের চাঞ্চল্যকর বার্তা
সায়ের জানিয়েছেন, ‘অ্যানোনিমাস গ্লোবাল সাউথ’ নামের একটি হ্যাকার গ্রুপ সম্প্রতি তাকে একটি ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) তিনি সেটি নিজের ফেসবুক আইডিতে প্রকাশ করেন। ভিডিওতে উত্থাপিত তথ্যগুলোর সত্যতা যাচাই করে তিনি তা প্রকাশ করেছেন বলে জানান।
হ্যাকার গ্রুপটি তাদের ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের জনগণ, সরকার ও সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসের পাইলটদের উদ্দেশে বলে, “আমরা তোমাদের ককপিটের ছায়া থেকে দেখছি, ইনবক্স ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে যা তোমরা নিরাপদ ভেবেছিলে, সেখান থেকেই আমরা নজর রাখছি।”
ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেইল, মাদক ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করার অভিযোগ
ভিডিওতে বলা হয়, “তোমরা (পাইলটরা) এক দশকের বেশি সময় ধরে নারী সহকর্মীদের ব্ল্যাকমেইল, ধর্ষণ, মাদক খাইয়ে অচেতন করা, ভিডিও ধারণ ও বিক্রির কাজে লিপ্ত। কিছু নারীকে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়েছে।” ভিডিওতে আরও উল্লেখ করা হয়, পাইলটরা তাদের পদমর্যাদা ও ইউনিফর্মকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে সহকর্মীদের জীবন ধ্বংস করেছে।
সোনা পাচার ও অর্থপাচার চক্র
ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করা হয়, পাইলটরা ফ্লাইট ব্যবহার করে সোনা ও কালো টাকা পাচার করেছে, কাস্টমসের নজর এড়িয়ে কাজ করেছে দালালদের সহায়তায়, এবং একটি এয়ারলাইনসকে অপরাধচক্রের পাইপলাইন হিসেবে ব্যবহার করেছে।
উচ্চপর্যায়ের জড়িত ব্যক্তিরা
এতে আরও বলা হয়, “এই অপরাধচক্র কেবল পাইলটরা চালায় না। এর পেছনে আছে অবসরপ্রাপ্ত বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা, পাইলট ইউনিয়নের নেতা ও দুটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মী। তারা ধর্ষণকারীদের রক্ষা করে, প্রমাণ গুম করে, এবং লাভের ভাগ নেয়।”
মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তারাও অভিযুক্ত—যারা ঘুষ গ্রহণ, তথ্য গোপন, যৌন নির্যাতন ধামাচাপা দেওয়া ও পাচার রুট সচল রাখতে সাহায্য করেছেন।
সরকারের প্রতি আহ্বান
ভিডিও বার্তায় সরকারকে উদ্দেশ করে বলা হয়, “যদি সরকার ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এই নীরবতা হবে সহায়তা। সংশ্লিষ্ট পাইলটদের বিচার করতে হবে, সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে, এবং স্থায়ীভাবে ফ্লাইট অপারেশন থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে।” একইসঙ্গে অপরাধে সহায়তাকারী অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, গোয়েন্দা কর্মী ও ইউনিয়ন নেতাদের প্রকাশ্যে আনতে ও বিচারের আওতায় আনতে আহ্বান জানানো হয়।
জনগণের প্রতি বার্তা
বাংলাদেশের জনগণকে উদ্দেশ করে বলা হয়, “এই পাইলটরা রক্ষক নয়, ককপিটে বসে থাকা হিংস্র শিকারি। এদের পতন অনিবার্য—আর তা ঘটাতে হবে আপনাদেরকেই।”
ভুক্তভোগীদের প্রতি বার্তা
নারী সহকর্মী ও ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে ভিডিওতে বলা হয়, “তোমরা দুর্বল নও। আমরা তোমাদের পাশে আছি। তোমাদের নীরবতা সম্মতি ছিল না। বিচার আসছে।”
অপরাধীদের হুঁশিয়ারি
ভিডিওর শেষাংশে অপরাধীদের উদ্দেশে বার্তা দিয়ে বলা হয়, “আমরা জানি তোমাদের নাম, ঠিকানা, গোপন অ্যাকাউন্ট, হোটেল রুমের রসিদ, চ্যাটলগ ও কল রেকর্ড। পালাতে পারবে না। তোমাদের কোনো গেট নেই, লাউঞ্জ নেই, নিরাপদ জায়গা নেই। পতন অনিবার্য। আমরা অ্যানোনিমাস। আমরা ক্ষমা করি না। আমরা ভুলে যাই না। প্রস্তুত হও। আমরা আসছি।”