বাংলাদেশের চলমান ইস্যুতে আলোচনায় আগ্রহী ভারত: রণধীর জয়সওয়াল

বাংলাদেশের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘিরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘উপযুক্ত পরিবেশে’ আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বৃহস্পতিবার নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল (Randhir Jaiswal) বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে কাজ করতে ভারত প্রস্তুত, তবে সেটি হতে হবে পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে।”

পার্লামেন্টে আলোচনা: বাংলাদেশ সম্পর্কিত চার বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ

এই মন্তব্য এমন সময় এলো, যখন ভারতের পার্লামেন্টের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে চারজন বিশেষজ্ঞকে আহ্বান জানিয়েছে। তাঁরা হলেন:

আলোচনার প্রেক্ষাপট ও উদ্বেগ

দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, এই আলোচনায় যেসব বিষয়ে মতামত নেওয়া হবে, তার মধ্যে রয়েছে:

  • ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Dr. Muhammad Yunus) এর নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি
  • ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান
  • বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি
  • আগস্ট ২০২৪-এ শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত সম্পর্ক

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান ত্রিপাক্ষিকতা নিয়ে ভারতের পর্যবেক্ষণ

রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “বাংলাদেশ ১৯ জুন চীন (China) ও পাকিস্তান (Pakistan)–এর সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়েছে। আমরা আমাদের অঞ্চলের উন্নয়ন ও তার ভারতের স্বার্থে কী প্রভাব ফেলতে পারে—তা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করি।”

গঙ্গা চুক্তি ও নদী ব্যবস্থাপনা নিয়ে মন্তব্য

১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে জয়সওয়াল বলেন, “ভারত ও বাংলাদেশ ৫৪টি অভিন্ন নদী ভাগাভাগি করে। এ নিয়ে কাজ করতে যৌথ নদী কমিশন রয়েছে এবং এতে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়।”

তিনি বলেন, “গঙ্গা চুক্তির মত বিষয়গুলোতে কাজ করার জন্য আমরা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সমতার নীতি, পারস্পরিকতা ও ন্যায্য আচরণ প্রত্যাশা করি।”

ঢাকার খিলক্ষেতে মন্দির ভাঙা নিয়ে ভারত মর্মাহত

খিলক্ষেত এলাকায় একটি মন্দির ভাঙার ঘটনায় ভারত মর্মাহত বলেও মন্তব্য করেন জয়সওয়াল।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মন্দিরটির নিরাপত্তা না দিয়ে ঘটনাটি ‘অবৈধ জমি দখল’ হিসেবে দেখিয়েছে এবং বিগ্রহ সরানোর আগেই মন্দিরটি ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশে হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তির ওপর হামলা বারবার ঘটছে—এটা উদ্বেগজনক।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “হিন্দু সম্প্রদায়, তাদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব।”