জামায়াতের করুণায় রাষ্ট্রপতির বেঁচে থাকা লজ্জাজনক: ফজলুর রহমান

বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ফজলুর রহমান বলেছেন, “আজকের বাংলাদেশে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বেঁচে আছেন জামায়াতে ইসলামীর করুণায়। এটা জাতির জন্য লজ্জার।”

নির্বাসনের অভিযোগ ও আবেগঘন বক্তব্য

শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার চৌগাংগা ইউনিয়নের চৌগাংগা কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম আলহাজ আব্দুল জব্বার-এর রুহের মাগফেরাত কামনায় শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফজলুর রহমান বলেন, “আমি দেশে আসতে পারিনি বছরের পর বছর। আবদুল হামিদ আমাকে ফিরতে দেয়নি। মা-বাবার কবরে গিয়ে দোয়া করতে পারিনি, ঈদের দিন দেশেও থাকতে পারিনি। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেল খেটেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আজকে জামায়াতে ইসলামীর করুণায় আবদুল হামিদ বেঁচে আছে। তাঁর শ্যালক জিহাদ খান এখন করিমগঞ্জ-তাড়াইল আসনে জামায়াতের প্রার্থী। গোলাম আজম-এর ছেলে আযমীর করুণা, ডা. শফিকুর রহমান-এর দোয়া নিয়ে বিদেশ যেতে ও আসতে হচ্ছে। এমন অবস্থা যারা দেশের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন, তারা আজ জামায়াতের দয়ার পাত্র।”

তিনি বলেন, “আমি কখনো জামায়াতের করুণায় বাঁচতে চাই না। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের করুণা নিয়ে বেঁচে থাকা আমার জন্য অসম্মানের।”

মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় চেতনার পক্ষে কঠোর অবস্থান

ফজলুর রহমান বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে আমি কোনোদিন হারাতে দেবো না। আমি লোভ চাই না, ক্ষমতা চাই না, চাই শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের অস্তিত্ব। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে বলেই আজকের বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধ মানি না মানে মা-কে মানি না।”

নতুন বাংলাদেশ দিবস নিয়ে উদ্বেগ

তিনি নতুন ‘বাংলাদেশ দিবস’ ঘোষণার সমালোচনা করে বলেন, “বাংলাদেশের নাম কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে গড়া নাম বাংলাদেশ থাকবে, থাকবে চিরকাল। যারা পাকিস্তানের চিন্তা করে, তাদের জন্য হুঁশিয়ারি রইলো।”

রাজনৈতিক বার্তা ও নির্বাচন প্রসঙ্গ

তিনি বলেন, “আমি ইউনূস সাহেবকে ছয়দিন সময় চাইলে এক ঘণ্টাও দেননি। অথচ আজ আপনি পনেরো ঘণ্টা প্লেন চালিয়ে লন্ডন যাচ্ছেন, আবার ফিরছেন। এখন বলছেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দেবেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমি আর গণ্ডগোল করতে চাই না। তবে, রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।”

শোকসভায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন তোফায়েল আহমেদ তোতা মিয়া। এতে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট উম্মে কুলসুম রেখা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন, ইটনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম কামাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুজ্জামান ঠাকুর স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মনির উদ্দিন, সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন মীর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ রহমান এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।