জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens Party) এর দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ (Hasnat Abdullah)-র ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) (ACC) আরও এক প্রতারককে গ্রেফতার করেছে। সোমবার (৩০ জুন) অভিযান চালিয়ে সোহাগ পাটোয়ারী নামে এক ব্যক্তিকে রাজধানীর মুগদা (Mugda) এলাকার দক্ষিণ মান্ডা (Dakshin Manda) থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তি ও অবস্থান
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তির নাম সোহাগ পাটোয়ারী (৪০)। তার গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর (Laxmipur) জেলার রামগঞ্জ থানা (Ramganj Police Station)-র দাশপাড়া গ্রামে। তিনি রাজধানীর দক্ষিণ মান্ডা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
অনুসন্ধান ও দুদকের বক্তব্য
দুদক-এর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম (Md. Akhtarul Islam) জানান, হাসনাত আব্দুল্লাহ-র ফেসবুক পোস্টের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু হয়। পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক পরিচালকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে পুলিশ (Police), র্যাব (RAB) ও অন্যান্য সংস্থার সহায়তায় চক্রটিকে চিহ্নিত করা হয় এবং মূলহোতা সেলিমসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
পূর্ববর্তী গ্রেফতার ও চক্রের পরিচয়
এর আগের দিন (২৯ জুন) আরও চার প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলেন:
– মো. সেলিম (৪০), পিরোজপুর (Pirojpur)
– মো. তরিকুল ইসলাম (৪০), বাগেরহাট (Bagerhat)
– মো. আতিক (৩৮), ঢাকা (Dhaka)
– মো. আব্দুল হাই সোহাগ (৩৫), নোয়াখালী (Noakhali)
জব্দকৃত আলামত ও প্রতারণার কৌশল
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়:
– একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা
– বুম মাইক্রোফোন, সেলফি স্টিক
– দুটি পাসপোর্ট
– সমকাল (Samakal) পত্রিকার একটি ভুয়া আইডি কার্ড
– এশিয়ান টিভি (Asian TV) ও এফসি টিভির ভিজিটিং কার্ড
– সোনালী ব্যাংক (Sonali Bank) এর একটি চেক বই
– ছয়টি মোবাইল ফোন ও ১৩টি সিমকার্ড
চক্রটি নিজেদের কখনো দুদক-এর চেয়ারম্যান, কখনো মহাপরিচালক বা কর্মকর্তার পরিচয়ে পরিচয় দিয়ে মামলার নিষ্পত্তির নামে দীর্ঘদিন প্রতারণা করে আসছিল। তারা ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই দুদক-এর নজরদারিতে ছিল। এমনকি মহাপরিচালকের ছবি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট ফেসবুক গ্রুপ খুলে প্রতারণা চালাত।
হাসনাতের পোস্ট ও মামলার অগ্রগতি
গত ২৪ জুন হাসনাত আব্দুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে ‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি উল্লেখ করেন, এক ডাক্তার মাহমুদা মিতু (Mahmuda Mitu)-র কাছে দুর্নীতির অভিযোগ না থাকলেও ক্লিয়ারেন্স নিতে এক লাখ টাকা দাবি করা হয় ‘ডিজি আকতার’ ও ‘ডিডি’ পরিচয়ে।
দুদক-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, পোস্টে যাচাই-বাছাই ছাড়া কমিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। এরপর ঘটনাটি আমলে নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান শুরু হয় এবং প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।