বাংলাদেশ ব্যাংক (Bangladesh Bank) এর সাবেক গভর্নর ও বর্তমান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ (Dr. Salehuddin Ahmed) বলেছেন, তার পরবর্তী সময়ের গভর্নররা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করেননি, বরং সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে সচিবালয়ে (Secretariat) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নরদের ভূমিকা নিয়ে মন্তব্য
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের কার্যক্রম চলত সরকারের নির্দেশ ও আদেশ অনুযায়ী। গভর্নররা কার্যত ছিলেন সরকারের প্রতিনিধি। যদিও এখন পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।” তিনি জানান, তার সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অনেকটাই স্বাধীনভাবে চলেছে এবং বর্তমানে কিছু উন্নয়নও লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দুদক প্রসঙ্গে সংযত মন্তব্য
দুর্নীতি দমন কমিশন (ACC) নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “আমি দুদক নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ হচ্ছে না—এটা লক্ষ্য করা দরকার।”
এনবিআর প্রসঙ্গে বক্তব্য
এনবিআর (NBR) এর কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদক অনুসন্ধান ও অ্যাকাউন্ট জটিলতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অনেকে আমাকে জানিয়েছেন তাদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে দুদক খতিয়ে দেখবে, সেটাই তাদের দায়িত্ব।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় স্বার্থের বিপক্ষে গিয়ে সব কার্যক্রম একদম বন্ধ করে দেওয়া ঠিক নয়। আন্দোলন যা হওয়ার হয়েছে, এখন ভয় বা পক্ষপাত ছাড়া সবার ঠিকভাবে কাজ করা উচিত।”
টক শো এবং বাস্তবতা
তিনি টক শো নিয়ে সমালোচনার জবাবে বলেন, “অনেকে বলেন কিছুই হচ্ছে না। কিন্তু দেখার জন্য চোখ থাকতে হয়। শুধু বিল্ডিং মানেই সব নয়। অনেক উন্নয়ন হয়েছে ভেতরে ভেতরে। অনলাইনভিত্তিক অনেক সেবা চালু হয়েছে।”
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, “অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক (World Bank) বা আইএমএফ (IMF) এর সহায়তা থাকলেও সবকিছু তাদের কথামতো করা হচ্ছে না, বরং আমাদের প্রয়োজনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।”
সারসংক্ষেপ
অর্থ উপদেষ্টা হিসাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা, দুদকের কার্যক্রম ও এনবিআর পরিস্থিতি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে মন্তব্য করেন। তিনি সরকারকে সরাসরি দায়ী না করলেও পূর্ববর্তী কিছু সিদ্ধান্ত ও প্রবণতার সমালোচনা করেন।
