তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে সব দলের ঐকমত্য

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহাল ও নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে দেশের সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (National Consensus Commission) এর সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Ali Riaz)। বুধবার (২ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমি (Foreign Service Academy)র দোয়েল হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত আসে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সীমানা পুনর্নির্ধারণে ঐকমত্য

আলী রীয়াজ জানান, আলোচ্যসূচিতে তিনটি বিষয় ছিল—তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা, নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিষয়। এর মধ্যে প্রথম দুটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সুস্পষ্ট ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশন উভয়েই নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারণে সুপারিশ দিয়েছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, প্রতি আদমশুমারির পর অনধিক ১০ বছরের মধ্যে সীমানা নির্ধারণে সংবিধানের ১১৯ অনুচ্ছেদের (১)(ঘ) ধারায় সংশোধন করে একটি কমিটি গঠনের বিধান যুক্ত করার কথা।

সীমানা নির্ধারণে স্থায়ী কমিটির সুপারিশ

আলী রীয়াজ আরও জানান, বর্তমান আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সীমানা নির্ধারণ আইন ২০২১ সালে তৈরি হলেও ২০২৫ সালে তা সংশোধিত হয়েছে। এই আইনের আওতায় একটি নির্দিষ্ট কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা সকল রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব এবং ঐকমত্যের প্রতিফলন ঘটাবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের জন্য এই কমিটিতে দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্তি এবং প্রয়োজনে বিদ্যমান কমিটি পরিবর্তনের প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে সমঝোতা

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের সব রাজনৈতিক দল এ ব্যবস্থাকে পুনর্বহাল করার পক্ষে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। আলোচনা হয়েছে এর কাঠামো, সময়সীমা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও।

তিনি জানান, সংবিধান সংস্কার কমিশন ৯০ দিনের এবং নির্বাচন কমিশন ১২০ দিনের মেয়াদের প্রস্তাব দিয়েছে। সময়কাল নিয়ে আলোচনা এখনও চলমান, তবে রাজনৈতিক দলগুলো অনেক কাছাকাছি এসেছে।

জুলাইয়ের মধ্যে ঐকমত্যভিত্তিক সনদ প্রকাশের প্রত্যাশা

আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই সহযোগিতা বজায় থাকলে চলতি জুলাই মাসের মধ্যেই আমরা একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করতে পারবো।”