সৌদি আরবে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল হাবিবুর রহমানের
সৌদি আরব (Saudi Arabia)-এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন হাবিবুর রহমান শেখ (Habibur Rahman Sheikh), বয়স ৪২ বছর। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর তার স্ত্রী শারমিন আক্তার (Sharmin Akter) কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং আকুতি জানান— “আমার স্বামীকে আমার কাছে ফিরায় দেন, তারে দেশে নিয়া আসেন।”
ঈদের আগে দেশে ফেরার কথা ছিল হাবিবুরের
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে দেশে ফেরার কথা ছিল হাবিবুর রহমানের। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবায়ন হলো না। মঙ্গলবার দাম্মাম শহরে (Dammam) সড়ক ডিভাইডারের কাজ করার সময় একটি দ্রুতগতির মাইক্রোবাসের চাপায় তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
পরিবারের আহাজারি
হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর খবরে ভাঙ্গা পৌর শহর (Bhanga Municipal Town) এলাকায় তার বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার স্ত্রী শারমিন আকুতি জানিয়ে বলেন, “কী দিন আল্লাহ আমারে দিয়া গেলো রে? তিন অবুঝ শিশুরে আমি ক্যামনে বাঁচায় রাখবো। আমি আমার স্বামীরে দেখতে চাই।”
তাদের তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে লিমা আক্তার (Lima Akter) বয়স ১৭, পড়াশোনা করছে দাড়িয়ার মাঠ মাদ্রাসায়। দ্বিতীয় সন্তান ছেলে সামিউল শেখ (১১) খামিনার বাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (Khaminar Bag Govt. Primary School)-এর চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে আয়শা আক্তার (৫) এখনো স্কুলে যায় না।
হাবিবুরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তানরা কান্নায় ভেঙে পড়েছে। তবে পাঁচ বছরের আয়শা যেন কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না, সে ছিল সম্পূর্ণ নিরব।
দীর্ঘ ১৫ বছর বিদেশ জীবন
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, হাবিবুর রহমান প্রায় ১৪-১৫ বছর ধরে সৌদি আরব (Saudi Arabia)-এ কাজ করছিলেন। সর্বশেষ তিনি দুই বছর আগে দেশে এসেছিলেন।
তার শ্যালক আলাউদ্দিন শেখ (Alauddin Sheikh) বলেন, “ঘটনার ঘণ্টা দুই পর আমরা খবর পাই দুলাভাই গাড়ি চাপায় মারা গেছেন। পরে তার রুমমেটের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে পারি।”
লাশ দেশে আনতে উদ্যোগ
পরিবার জানায়, তারা লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বক্তব্য
ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদ (Gharua Union Parishad)-এর ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল মান্নান (Abdul Mannan) বলেন, “সৌদি আরবে মাইক্রোবাস চাপায় আমাদের গ্রামের হাবিবুর রহমান মারা গেছেন। জীবন ও জীবিকার তাগিদে তিনি বিদেশে গিয়েছিলেন। এ মৃত্যু আমাদের জন্য বড় এক বেদনার খবর।”