কলকাতা, লন্ডন ও নিউইয়র্কে বিলাসবহুল জীবনে অবস্থান করছেন আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা

বিদেশে বিলাসী জীবনে আওয়ামী লীগের নেতারা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও বিদেশে বসবাসরত আওয়ামী লীগের (Awami League) সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা ভোগ করছেন বিলাসবহুল জীবন। প্রথম আলো (Prothom Alo)-র অনুসন্ধানে উঠে এসেছে তাঁদের অভিজাত জীবনযাপনের চিত্র।

কলকাতায় অভিজাত জীবন

ওবায়দুল কাদের (Obaidul Quader), সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, কলকাতার রাজারহাট নিউটাউন এলাকায় বসবাস করছেন। সেখানে একই এলাকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল (Asaduzzaman Khan Kamal)। সাবেক এমপি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম (Alauddin Ahmed Chowdhury Nasim) কলকাতার টাটা হাউজিং অ্যাভিনিউতে দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকছেন।

নিউটাউন হাইটস প্লাজায় রয়েছেন তানভীর হাসান ছোট মনির (Tanvir Hasan Chhoto Monir), যিনি শাজাহান খানের (Shajahan Khan) জামাতা। তাঁদের ঘিরে নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও ব্যক্তিগত কর্মচারীর ঘনিষ্ঠ ব্যবস্থাও রয়েছে।

ছাত্রলীগ নেতারাও কলকাতায়

নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ (Chhatra League)-এর সভাপতি সাদ্দাম হোসেন (Saddam Hossain) ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান (Sheikh Wali Asif Inan) কলকাতার অভিজাত এলাকায় অবস্থান করছেন। তাঁদের অর্থের উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

অন্যান্য প্রভাবশালী নেতা

জাহাঙ্গীর কবির নানক (Jahangir Kabir Nanak), আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম (AFM Bahauddin Nasim), শেখ ফজলুল করিম সেলিম (Sheikh Fazlul Karim Selim), শেখ হেলাল উদ্দিন (Sheikh Helal Uddin), শেখ তন্ময় (Sheikh Tonmoy), নসরুল হামিদ (Nasrul Hamid), অসীম কুমার উকিল (Aseem Kumar Ukil) ও অপু উকিল (Apu Ukil) সহ একাধিক নেতা কলকাতা ও ভারতের বিভিন্ন শহরে বসবাস করছেন।

লন্ডনে বিলাসবহুল বসবাস

হাছান মাহমুদ (Hasan Mahmud), সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি যুক্তরাজ্যের নাগরিক। ঈদের সময় তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের (UK Awami League) সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ (Sultan Mahmud Sharif)-কে দেখতে যান।

আবদুর রহমান (Abdur Rahman), সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, বার্ডস হাসপাতাল (Birds Hospital), লন্ডনে চিকিৎসাধীন। শ ম রেজাউল করিম (Sh M Rezaul Karim), শফিকুর রহমান চৌধুরী (Shafiqur Rahman Chowdhury) এবং খালিদ মাহমুদ চৌধুরী (Khalid Mahmud Chowdhury)–সহ অনেকে লন্ডন ও এর আশেপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন।

সাইফুজ্জামান চৌধুরী (Saifuzzaman Chowdhury), সাবেক ভূমিমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় ৫৭২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২০টি বাড়ি কেনেন বলে সিআইডি তথ্য প্রকাশ করেছে।

নিউইয়র্ক ও মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান

খন্দকার মোশাররফ হোসেন (Khandaker Mosharraf Hossain), শেখ হাসিনার জামাতা ও সাবেক মন্ত্রী, বর্তমানে দুবাইয়ে অবস্থান করছেন। তিনি আগে জেনেভা (Geneva) এবং পরবর্তীতে ছেলের কাছে দুবাইয়ে যান।

আত্মগোপনে মোহাম্মদ আলী আরাফাত

মোহাম্মদ আলী আরাফাত (Mohammad Ali Arafat), ঢাকা-১৭ এর সাবেক সংসদ সদস্য, এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন। তিনি বিদেশে আছেন কিনা, তা স্পষ্ট করেননি।

ভারতের প্রশাসনের অবস্থান

কলকাতায় বাংলাদেশ দূতাবাস (Bangladesh Embassy)-এর এক কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় প্রশাসন এসব নেতাদের বিষয়ে ওয়াকিবহাল এবং অপরাধ না করলে তাঁদের হয়রানি করা হয় না।