চারুকলায় অগ্নিকাণ্ড: ফ্যাসিস্টের মুখ ও শান্তির পায়রা মোটিফ পুড়িয়ে দেওয়া
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (Dhaka University) এর চারুকলা অনুষদ (Faculty of Fine Arts) আয়োজিত নববর্ষের আনন্দ শোভাযাত্রার জন্য তৈরি ‘ফ্যাসিস্টের মুখাকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে একটি উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন ছাত্রলীগ (Chhatra League) এর ফেনী (Feni) জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদ।
ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক স্ট্যাটাস: “শেখ হাসিনার কর্মীরা এখনো বেঁচে আছে”
ঘটনার পরপরই নিজের ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে নুর করিম জাবেদ লেখেন, “চারুকলায় অসাধ্য কাজটি করা গেরিলা বাহিনীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। শেখ হাসিনার কর্মীরা এখনো বেঁচে আছে।”
এমন বক্তব্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মন্তব্যের ঘরে একজন ব্যবহারকারী মনজুরুল ইসলাম মিশু লেখেন, “তোরা কীভাবে পারলি তোদের মা সমতুল্য পিও নেত্রী শেখ হাসিনা আফাকে এভাবে পুড়িয়ে দিতে? তোদের হাতটা কী একটুও কেঁপে উঠে নাই।”
আরও একজন, মো. সাব্বির হোসাইন মন্তব্য করেন, “ফ্যাসিবাদের সন্তানরা তার মায়ের মুখে আগুন দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছেন।”
স্ট্যাটাস সম্পাদনা ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়া
প্রাথমিক স্ট্যাটাস দেওয়ার দুই ঘণ্টা পর তা সম্পাদনা করে নুর করিম জাবেদ লেখেন, “এ বছর এমনিতেও মঙ্গল শোভাযাত্রা হচ্ছে না, যেটা হচ্ছে সেটা বিকৃত মানসিকতার লোকদের শোভাযাত্রা। তাদের মধ্যে আবার বাঁধা পাওয়ারফুল জঙ্গি বাহিনী, সেই লাল বাহিনীর তাণ্ডবে পুড়ে ছাই বিকৃত শোভাযাত্রা।”
পরবর্তীতে তিনি তার ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাসটি মুছে ফেলেন। কিন্তু ততক্ষণে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিক্রিয়া
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন (Anti-Discrimination Student Movement) ফেনী শাখার প্রতিনিধি মুহাইমিন তাজিম বলেন, “পতিত সরকারের দোসররা এখনও মাঠে সক্রিয় রয়েছে। তাদের নেতারা প্রকাশ্যে এ ঘৃণিত কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানাচ্ছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি এই ধরনের ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
সংগঠনের আরেক প্রতিনিধি ওমর ফারুক বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়েছিলো, যাতে তার শাসনামলের গুম, খুন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। কিন্তু প্রতিকৃতি তৈরি হওয়ার পর তার লালিত বাহিনী পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে দেয় এবং অনলাইনে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।”
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা দেশের বাইরে
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা নুর করিম জাবেদের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি, কারণ তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।