বিনিয়োগ সম্মেলন সফল হলেও ‘দশে দশ’ নয়: আশিক চৌধুরী
সম্প্রতি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত চার দিনব্যাপী ‘বিনিয়োগ সম্মেলন’ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়ন তুলে ধরেছেন চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন (Chowdhury Ashiq Mahmud Bin Harun)। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (Bangladesh Investment Development Authority – BIDA)-এর নির্বাহী চেয়ারম্যান।
এই সম্মেলনে তার উপস্থাপনা ব্যাপক প্রশংসা কুড়ালেও আশিক নিজে এটিকে শতভাগ সফল বলছেন না। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, “সম্মেলন দশে দশ পাওয়ার মতো হয়নি সব ক্ষেত্রে।”
আয়োজনে সরকারের খরচ ও বিনিয়োগ ঘোষণা
রবিবার (১৩ এপ্রিল) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আশিক চৌধুরী জানান, চার দিনব্যাপী এই সম্মেলনের মোট ব্যয় ছিল প্রায় ৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ছিল ১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা এবং বাকি অর্থ এসেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বাণিজ্যিক অংশীদারদের, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ডাচ দূতাবাস, HSBC, Citi, EBL, BGMEA, Lightcastle Partners, Inspira, Sajida Foundation, FICCI, IMS এবং High Voltage এর মতো প্রতিষ্ঠান থেকে।
তিনি আরও জানান, সম্মেলনের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩,১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ ঘোষিত হয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হান্ডা গ্রুপ ও ShopUp-এর বিনিয়োগ।
ব্যক্তিগত পোস্টে বিশ্লেষণ
রবিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ পোস্টে আশিক চৌধুরী সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে তিনি বলেন:
“দশে দশ পাবার মতো হয়নি সব ক্ষেত্রে… যতটুকু ভালো, পুরাটাই সবার ক্রেডিট। ফেইলিউরগুলা আমাদের।”
তিনি জানান, সম্মেলনের আয়োজনে অংশ নিয়েছে সরকার, রাজনৈতিক দলসমূহ, বেসরকারি খাত, বিদেশি দূতাবাস এবং গণমাধ্যম।
সংখ্যায় সম্মেলন
- **উপস্থিতি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৭১০ জন, এর মধ্যে ৪১৫ জন বিদেশি বা প্রবাসী বাংলাদেশি।
- ব্রেকআউট সেশনে অংশগ্রহণ: সাড়ে ৩ হাজারের বেশি।
- প্যানেলিস্ট: মোট ১৩০ জন।
- দ্বিপাক্ষিক মিটিং: ১৫০টি।
- চুক্তি স্বাক্ষর (MOU): ৬টি, যেমন ILO ও Artemis-এর সঙ্গে।
আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
আশিক চৌধুরী উল্লেখ করেন, বিদেশিরা এখনো বাংলাদেশের প্রতি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে, যা পরিবর্তনের জন্য সময় ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশকে প্রমোট করা বিডার প্রাথমিক দায়িত্ব। আমাদের একই সাথে ইস্যুগুলো সলভ করা, বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়ন করা আর দেশকে প্রমোট করা চালিয়ে যেতে হবে।”
আত্মবিশ্বাস গঠনে সম্মেলনের ভূমিকা
তিনি ‘The Audacity of Hope’ বইয়ের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, দেশের মানুষের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এ ধরনের আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এমন আয়োজন প্রতি বছর হওয়া উচিত।
সম্মেলনের স্ট্রাকচার
- ৭-৮ এপ্রিল: ইপিজেড ও ইকোনমিক জোন ভিজিট, স্টার্টআপ সেশন।
- ৯ এপ্রিল: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সংস্কৃতির সাথে পরিচয়।
- ৯-১০ এপ্রিল: নেটওয়ার্কিং ও চুক্তি স্বাক্ষর।
শেষ কথা
আশিক চৌধুরী তার পোস্টের শেষে বলেন:
“আমার প্রেজেন্টেশনটা মধ্যমণি না। মধ্যমণি হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আর আমাদের উদ্যোক্তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ।”
তিনি সকল অংশগ্রহণকারী ও সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।