নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তায় বৈষম্যহীন বাংলাদেশের প্রত্যয়
প্রধান উপদেষ্টা (Chief Adviser) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Dr. Muhammad Yunus) বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তায় বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার এক নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে।”
নববর্ষ মানেই নতুন প্রত্যয়
সোমবার (১৪ এপ্রিল), বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখ আমাদের প্রাণের উৎসব, বাঙালির সর্বজনীন উৎসব। আজকের এই দিনে দেশের ভেতরে এবং বাইরে বসবাসরত সব বাঙালিরা আনন্দের সাথে এই দিনটি উদযাপন করছে।”
ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, বাংলা সাল মূলত ফসলি সন হিসেবে কৃষিকাজের সুবিধার্থে শুরু হয়েছিল এবং এখনো দেশের কৃষকরা বাংলা তারিখ অনুযায়ী চাষাবাদ পরিচালনা করে থাকেন। হালখাতা এখনো বাংলাদেশের হাট-বাজারে, শহর ও বন্দরে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য হিসেবে ধরে রাখা হয়েছে।
ঐতিহ্য রক্ষায় সবার সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান
তিনি বলেন, নববর্ষের বৈশাখী মেলায় দেশের প্রতিটি জেলায় উদ্যোক্তারা তাদের সৃজনশীলতা তুলে ধরেন। ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি, মাটির হাড়ি-পাতিল, খেলনা, হাতপাখার মতো পণ্যের মাধ্যমে এই দিনটি ঘিরে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের এইসব ঐতিহ্য যেন শুধু নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। আমরা যেন বিশ্বের দরবারে তা তুলে ধরতে পারি। নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের সংস্কৃতি উৎসবমুখর পরিবেশে পৌঁছে দিতে এই দিনটি একটি চমৎকার সুযোগ।”
পহেলা বৈশাখ—সমগ্র জাতির মিলনমেলা
তিনি জানান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী (Indigenous communities of hill and plain regions) এবারের নববর্ষ চৈত্র সংক্রান্তির ধারাবাহিকতায় বড় পরিসরে উদযাপন করছে। “পহেলা বৈশাখ হলো সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। এটি সবাইকে আপন করে নেওয়ার দিন,” বলেন তিনি।
ড. ইউনূস আরও বলেন, “আসুন, আমরা অতীতের গ্লানি ও দুঃখ ভুলে গিয়ে নতুন উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাই এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলি। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এ বছরের নববর্ষের অঙ্গীকার।”
নববর্ষে শুভ কামনা ও আশাবাদ
তিনি নববর্ষের সকল আয়োজনের সাফল্য কামনা করে বলেন, “নববর্ষ ১৪৩২ আমাদের সবার জন্য শুভদিনের সূচনা করুক। নতুন ও গভীর আনন্দের উন্মোচন হোক আমাদের জীবনে। সবাইকে আবারও নববর্ষের শুভেচ্ছা ও সালাম জানাচ্ছি। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।”