লেবার পার্টি-র সাবেক এমপি ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেছেন। লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের প্রমাণ নেই।”
লন্ডনে টিউলিপের প্রতিক্রিয়া
গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির খবরে লন্ডনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। টিউলিপ বলেন, “বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ মিডিয়া ট্রায়াল পরিচালনা করছে।” তিনি আরও জানান, তার আইনজীবীরা চিঠি পাঠালেও বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি।
অভিযোগের মূল উৎস
দুদক সূত্র মতে, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে টিউলিপের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। প্রকল্পে ‘অস্বাভাবিক ব্যয়’ ধরা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেন শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ববি হাজ্জাজ। অভিযোগ, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের চেষ্টা করা হয়েছে।
দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, “অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন নয়” এবং তদন্ত নথিভুক্ত প্রমাণের ভিত্তিতে চলছে।
আইনজীবীদের প্রতিক্রিয়া ও ব্রিটেনের অবস্থান
টিউলিপের আইনজীবী স্টিফেনসন হারউড বিবিসি-কে বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা এবং আমরা আগেই লিখিত জবাব দিয়েছি।” উল্লেখ্য, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর নৈতিক উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাস এর আগে অভিযোগ তদন্ত করে কোনো অসঙ্গতি পাননি। এরপরই টিউলিপ মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করেন।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যে প্রত্যর্পণ আইনের আওতায় বাংলাদেশ ‘২বি প্রত্যর্পণ দেশ’ হওয়ায়, বাংলাদেশকে উপযুক্ত প্রমাণ প্রদান করতে হবে। তবে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার-এর মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও বিশ্লেষণ
টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে মামলাটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক বিতর্ক নয়; এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতি, আইনি স্বচ্ছতা এবং প্রবাসী রাজনীতিকদের ন্যায্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে। রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীল তদন্তের মাধ্যমেই এই পরিস্থিতির গ্রহণযোগ্য সমাধান সম্ভব।