সাবেক সিআইডি (CID) প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া (Mohammad Ali Mia) ও কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে চার কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ এনেছেন ডা. মো. জোবায়দুর রহমান জনি (Dr. Zobaydul Rahman Joni)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) (Dhaka Reporters Unity – DRU)–তে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ আনেন।
তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
জনি বলেন, ২০২৩ সালের ২ আগস্ট সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শান্তিনগর চামেলীবাগ এলাকার ‘গ্রিন পিস অ্যাপার্টমেন্টে’ ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে সিআইডি সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা (Jewel Chakma)।
নির্যাতন ও অর্থ আদায়ের অভিযোগ
তাকে ২৯ ঘণ্টা আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয় এবং ‘রিমান্ডের ভয়’ দেখিয়ে চার কোটি টাকা আদায় করা হয় বলে দাবি করেন জনি। তিনি বলেন, “আমার স্ত্রী ও সন্তান বাসায় ছিলেন, হিজাব পরার সময় চাইলেও পুলিশ জোর করে প্রবেশ করে।” সিআইডির কর্মকর্তারা তাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে টার্গেট করে হয়রানি করেছেন বলেও অভিযোগ তার।
সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
তিনি জানান, র্যাব-১৪–এর বর্তমান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল চাকমা, সাবেক সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এসআই মেহেদী হাসান, সিআইডির এসআই আতিকুর রহমানসহ অজ্ঞাত আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে তিনি ১৫ এপ্রিল আদালতে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
ভয়ভীতির প্রেক্ষিতে টাকা পরিশোধ
তিনটি গাড়ি, একটি ফ্ল্যাট ও জমি বিক্রি করে তার পরিবার এসআই মেহেদী হাসানের গাড়িচালক সবুজের মাধ্যমে দফায় দফায় টাকা পরিশোধ করে। পুরো লেনদেনের সময় ও স্থান তদারকি করতেন এসআই আতিকুর রহমান। জনি বলেন, “ছয় দফায় চার কোটি টাকা দেওয়ার প্রমাণ ও অডিও রেকর্ড আমার কাছে রয়েছে।”
স্বাস্থ্যঝুঁকি ও হয়রানি
রিমান্ডে নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে কারাবাসকালীন ৪৩ দিন কারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়। মুক্তির পরেও মানি লন্ডারিংয়ের ভয় দেখিয়ে তার স্ত্রীর কাছ থেকেও অর্থ আদায় করা হয়।
অভিযোগের ভিত্তিহীনতা দাবি
জনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ভিত্তিহীন। সিআইডি দাবি করেছিল, ২০০৬ সাল থেকে মেডিকো সক্রিয়, অথচ আমাদের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১১-১২ সাল থেকে।”
তিনি আরও বলেন, “স্কাই সিটি হোটেল ও আগারগাঁওয়ের সিসিটিভি ফুটেজ থাকলে লেনদেনের সত্যতা স্পষ্ট হয়ে যাবে।”