ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার (Anandabazar) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ (Awami League)–এর ভেতরে চলছে বড় ধরনের সাংগঠনিক পুনর্গঠনের প্রস্তুতি। এই পরিকল্পনায় বর্তমান দলের প্রধান শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) ভবিষ্যতে নেতৃত্বে থাকবেন না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
নেতৃত্বে আসতে পারে ‘পরিচ্ছন্ন’ মুখ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আওয়ামী লীগ থাকবে, তবে শেখ হাসিনা থাকবেন না। দলকে নতুনভাবে সাজাতে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ নেতাদেরও নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে।” দলের পরিচিত কিছু নেতাকে সামনে এনে ‘নব্য আওয়ামী লীগ’ বা ‘পরিচ্ছন্ন আওয়ামী লীগ’ গঠনের একটি পরিকল্পনা এগিয়ে চলেছে।
তবে আওয়ামী লীগের বর্তমান নেতৃত্ব এই পরিকল্পনাকে ‘প্রতারণা’ ও দল ধ্বংসের ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করছেন।
দিল্লির উদ্বেগ
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের কূটনীতিকদের একাংশ এই পরিবর্তনকে ভারতের জন্য সুখকর মনে করছেন না। কারণ, যেসব নেতাদের সামনে আনার পরিকল্পনা রয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ এবং তাদের মধ্যে পাকিস্তান ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও রয়েছে।
ভারতের এক সাবেক কূটনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে আনন্দবাজার বলেছে, “আওয়ামী লীগ ঐতিহাসিকভাবে ভারতের বন্ধু। এই দলের নেতৃত্ব পাকিস্তানপন্থীদের হাতে গেলে তা ভারতের জন্য বিপর্যয়ের চেয়ে কম নয়।”
২০০৭-এর পুনরাবৃত্তি?
আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, “২০০৭ সালেও শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে অন্য কিছু নেতাকে নিয়ে দল গঠনের চেষ্টা হয়েছিল, যা ব্যর্থ হয়েছিল। এবারেও তেমন ষড়যন্ত্র ব্যর্থই হবে।”
তাঁর মতে, ভারতের কংগ্রেস যেমন গান্ধী পরিবারনির্ভর, তেমনি বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের কাছেও শেখ মুজিবুর রহমান (Sheikh Mujibur Rahman)–এর পরিবারের প্রতি অগাধ আস্থা রয়েছে। তিনি বলেন, “হাসিনাহীন আওয়ামী লীগ টিকবে না। আসলে এটাই তাদের উদ্দেশ্য—আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা।”
আত্মগোপনে থাকা নেতার মন্তব্য
কলকাতায় আত্মগোপনে থাকা এক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, এই ‘রিফাইন্ড’ চক্রান্ত এখন দলের সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। বিভিন্ন এলাকার নেতাদের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে—হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে নিরাপত্তা ও নির্বাচনী সুযোগ নিশ্চিত করা হবে। না করলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার বলেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়া
এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় কী করছে আওয়ামী লীগ?
দলের এক শীর্ষ নেতা জানান, শেখ হাসিনা নিজে দেশের ৬৪ জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করছেন। ইতোমধ্যে ২৩টি জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে এই বৈঠক সম্পন্ন হয়েছে। এ বৈঠকে তিনি সরাসরি কর্মীদের কথা শুনছেন এবং দলীয় মনোবল ধরে রাখতে নির্দেশ দিচ্ছেন।