২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্দোলনের সময়ে নিরব ভূমিকার কারণে সমালোচনার মুখে পড়া জাতীয় দলের অলরাউন্ডার ও সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসান ([Shakib Al Hasan]) সম্প্রতি তার অবস্থান নিয়ে মুখ খুলেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সময় ঘটে। এক দর্শকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার সময় সাকিবের একটি মন্তব্য—“আপনি দেশের জন্য কী করছেন?”—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়।
বিতর্কিত মন্তব্য ও তার পেছনের ব্যাখ্যা
সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব আল হাসান জানান, “সে ব্যক্তি বারবার আমাকে প্রশ্ন করছিল কেন আমি কিছু করছি না। এক পর্যায়ে আমি বললাম, ‘ভাই, আপনি কী করেছেন?’ সেখান থেকেই বিষয়টা বড় হয়ে যায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি তখন বুঝে উঠতে পারছিলাম না কী করাটা সঠিক হবে। কথা বললেই সেটা ফলপ্রসূ হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় ছিল। আমি ভেবেছিলাম, তখন চুপ থাকাটাই দায়িত্বশীল আচরণ।”
রাজনীতি ও দায়িত্বের দ্বন্দ্ব
সাকিব আল হাসান জানান, “সরকার এবং আরও অনেকে চেয়েছিল আমি একটা পোস্ট দিই। কিন্তু তাতে কী হবে? সেটা কি সাহায্য করবে, না আরও উত্তেজনা তৈরি করবে? আমি সব সময় দায়িত্বশীলভাবে কাজ করার পক্ষে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাকে কখনো রাজনীতিতে সরাসরি যুক্ত হতে বলা হয়নি, সব সময় বলা হয়েছে ‘তুমি শুধু খেলো।’ আমার সব সময়ের ফোকাস ছিল ক্রিকেটে—এমপি হওয়ার আগেও, পরেও।”
ভাইরাল ছবি ও জনআলোচনার কেন্দ্রবিন্দু
আন্দোলনের সময় সাকিব আল হাসান-এর একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে তাকে কানাডা ([Canada])-র একটি সাফারি পার্কে দেখা যায়। এ ছবি নিয়েও তৈরি হয় সমালোচনা।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ছবিটা আমি পোস্ট করিনি, এটি ছিল পূর্বনির্ধারিত পারিবারিক ভ্রমণ। তবে একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল, সেটা আমি বুঝি।”
জনমত ও ভক্তদের প্রতিক্রিয়া
বিভিন্ন মহল থেকে বলা হয়েছে, একজন জনপ্রিয় তারকা হিসেবে সাকিব আল হাসান-এর উচিত ছিল আন্দোলনরত জনগণের পাশে দাঁড়ানো। সাকিব বলেন, “আমি অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি যারা বলেছে ছবিটা পোস্ট করার সময়টা তাদের কষ্ট দিয়েছে। এখন বুঝতে পারি, এটা একটা ভুল ছিল।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ([United States])-এ অবস্থান করছেন সাকিব আল হাসান। তিনি জানান, দেশের মাটিতে টেস্ট খেলে বিদায় নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও তা পূরণ হয়নি। এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলে ওয়ানডে থেকেও অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়নি।