২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে ৮৫ হাজার ভারতীয়কে ভিসা দিল চীন, বন্ধুত্বের বার্তা শি জিনপিংয়ের

চলতি বছরের প্রথম চার মাসেই চীন ৮৫ হাজার ভারতীয় নাগরিককে ভিসা প্রদান করেছে, যা কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এই পদক্ষেপকে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বার্তা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping) এই ভিসা নীতির মাধ্যমে ভারতীয়দের প্রতি উষ্ণ বার্তা দিয়েছেন।

বন্ধুত্বের বার্তা ও বিশেষ ছাড়

ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত সু ফেইহং (Su Feihong) এক্স হ্যান্ডেলে বলেন, ‘আমরা চাই আরও বেশি ভারতীয় বন্ধু চীনে ভ্রমণ করুন ও আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হোন।’ এ লক্ষ্যে চীনা প্রশাসন ভারতীয় নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়ায় একাধিক ছাড় দিয়েছে।

  • অনলাইন অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই ভিসার আবেদন
  • স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণের ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রয়োজন নেই
  • ভিসা ফি আগের তুলনায় অনেক কম
  • দ্রুত ভিসা ইস্যুর ব্যবস্থা

সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়িক বিনিময়ের নতুন দ্বার

চীনের এই উদ্যোগ ভারত-চীন সম্পর্কের একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষাগত, পর্যটন, ব্যবসা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ করে মেডিকেল শিক্ষায় ভারতীয় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বরাবরই বেশি। মহামারির পর পুনরায় ভ্রমণ চালু হওয়াকে অনেকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

সীমান্ত ও ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

ভারত (India) ও চীন (China) অতীতে সীমান্ত ইস্যুতে উত্তপ্ত অবস্থানে থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে চীন কৌশলগতভাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করতে আগ্রহী বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। লাদাখ ও অরুণাচল সীমান্তে এখনও উত্তেজনা থাকলেও, ভিসা-নীতির এই ইতিবাচক বার্তা দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াবে বলে ধারণা।

যুক্তরাষ্ট্রকে মোকাবেলায় পরস্পরকে পাশে চায় চীন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন চীনা পণ্যের ওপর ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে। এর পাল্টা হিসেবে চীনও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের প্রতি চীনের সদয় মনোভাব বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং বলেন, “ভারত ও চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পরস্পরের পরিপূরক। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একে অপরকে সহযোগিতা করা গুরুত্বপূর্ণ।”

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন সম্ভাবনা

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের এই কৌশলিক সিদ্ধান্ত এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে তার কূটনৈতিক প্রভাব জোরদার করারই অংশ। লাদাখ (Ladakh) ও অরুণাচলের উত্তেজনা পুরোপুরি না কমলেও, এই ভিসা ছাড়ের মধ্য দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি বার্তা স্পষ্ট।