ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস–এর সঙ্গে চুক্তি করার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘গোপন বৈঠক’ ও ‘গঠনমূলক চুক্তি’র মাধ্যমে পারস্পরিক স্থিতিশীলতা ও সীমান্ত নিরাপত্তা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
কলকাতায় বক্তব্য, সরব মমতা
বুধবার (১৬ এপ্রিল) কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের এক সম্মেলনে বক্তৃতাকালে মমতা ব্যানার্জী এসব কথা বলেন। তিনি মোদিকে উদ্দেশ করে বলেন, “আপনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি জানেন না। আপনি ড. ইউনূস–এর সঙ্গে গোপন মিটিং করুন, চুক্তি করুন। দেশের ভালো হলে খুশি হবো।”
‘সম্পত্তির অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে’
মমতা ব্যানার্জী আরও অভিযোগ করেন, “আপনি আমার অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন, রাম-রহিমের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। এটা আপনার আওতায় পড়ে না।” তিনি সংবিধানের ১৮ ও ৩৫ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেন, “যা রাজ্যের বিধানসভার আওতাধীন সম্পত্তির অধিকার তা কেন্দ্র কেড়ে নিচ্ছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।”
বাংলাদেশ ইস্যুতে বিএসএফ ও কেন্দ্রকে আক্রমণ
বাংলাদেশ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতা বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশের হাত আছে। তাহলে বিএসএফ কেন তাদের ঢুকতে দিল?” এই প্রেক্ষাপটে তিনি সাম্প্রদায়িক ভেদাভেদ তৈরির চেষ্টার অভিযোগও আনেন।
রাজ্যজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি
বিতর্কিত ওয়াকফ সংশোধনী আইন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগ, প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটেছে। এ পরিস্থিতিতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশে মাঠে নামানো হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। মমতা ব্যানার্জী বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস যদি অশান্তি করত, তাহলে আমাদের বিধায়কদের বাড়ি আক্রান্ত হতো না।”
রাজনৈতিক বার্তা
তিনি আরও বলেন, “জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে থাকতে হবে। দাঙ্গা হলে রাস্তায় না বেরিয়ে ঘরে বসে থাকাটা সমাধান নয়।” পাশাপাশি কংগ্রেস ও বিজেপির উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে বলেন, “প্ররোচনা সৃষ্টি করা হয়েছে, যার দায় রাজ্য নয় বরং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের।”