পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ নির্মাণকারী চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ এর মানিকগঞ্জের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ছয়জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে মানিকগঞ্জ সদর থানা। ঘটনায় অন্যতম সন্দেহভাজন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা ফেসবুকে “মিশন কমপ্লিট” লিখে স্ট্যাটাস দিলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
আটককৃতদের পরিচয় ও স্ট্যাটাস বিতর্ক
পুলিশ জানিয়েছে, আটককৃতরা হলো: ছাত্রলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক আল আমিন ওরফে তমাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন আহাম্মদ পিয়াস, মীর মারুফ, আমিনুর রহমান, গড়পাড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল হোসেন এবং ছাত্রলীগ নেতা খান মোহাম্মদ রাফি ওরফে সিজন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, সিজন অগ্নিকাণ্ডের রাতেই ফেসবুকে “মিশন কমপ্লিট” স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন বলে জানায় পুলিশ।
তদন্ত কমিটি ও প্রশাসনের উদ্যোগ
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা। তিনি সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, যার নেতৃত্বে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজমুল হাসান খান। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ও পারিপার্শ্বিক তথ্য
চিত্রশিল্পীর বাড়ি যে গ্রামে অবস্থিত, সেখানে বসবাস করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক। এছাড়া তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ও আওয়ামী লীগের নেতারাও এই এলাকায় বসবাস করেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার এবং জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি সিফাত কোরাইশী সুমন।
সিআইডির তদন্তে প্রযুক্তি সহায়তা
ঢাকা থেকে আসা সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং প্রযুক্তিভিত্তিক তদন্তে নেমেছে। পুলিশের মতে, আটকৃতদের মধ্যে বিশেষ করে সিজনের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে।
মামলার অগ্রগতি
মানিকগঞ্জ সদর থানার ওসি এসএম আমানউল্লাহ জানান, চিত্রশিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষ নিজেই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আটক ব্যক্তিদের সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হবে।