জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে তিনটি মৌলিক শর্ত পূরণের আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশান (Gulshan) এলাকার হোটেল ওয়েস্টিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব শর্তের কথা জানান।
নির্বাচনের আগে জামায়াতের তিন শর্ত
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ একটি নতুন স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই বিজয়ের বাস্তব রূপ দিতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে।”
তিনি শর্ত তিনটি ব্যাখ্যা করেন—
১. মৌলিক ও দৃশ্যমান রাজনৈতিক সংস্কার
তিনি বলেন, “নির্বাচনের পূর্বশর্ত হলো একটি দৃশ্যমান গ্রহণযোগ্য মৌলিক সংস্কার। এই সংস্কারের রূপরেখা আমরা ইতোমধ্যে সংস্কার কমিশনের কাছে জমা দিয়েছি। এই সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের কোনো গণতান্ত্রিক ভিত্তি তৈরি হবে না।”
২. গণহত্যাকারীদের বিচার
জামায়াত আমির বলেন, “যারা গণহত্যা চালিয়েছে তাদের দৃশ্যমান বিচার করতে হবে। শহীদদের আত্মার প্রশান্তি এবং জনগণের আস্থা ফেরাতে এটি অত্যন্ত জরুরি।”
৩. পারস্পরিক সম্মান ও রাজনৈতিক সহাবস্থান
তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। আমি জিতলে নির্বাচন সুষ্ঠু, না জিতলে অসুস্থ—এই মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে। এ জন্য সকল পক্ষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।”
রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কারের প্রধান অংশীদার রাজনৈতিক দলগুলো। তারা যদি সহযোগিতা করে তাহলে দ্রুত নির্বাচন সম্ভব হবে। আর যদি তারা গতানুগতিক পথে হাঁটে, তাহলে আগের মতোই নির্বাচন হবে—যার দায় তাদেরকেই নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই শর্তগুলো মেনে চলা না হলে মার্চ-ফেব্রুয়ারি কিংবা নির্বাচনের কোনো সময়সীমা কিছুই অর্থবহ হবে না। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, সেটা আল্লাহই ভালো জানেন।”
এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে, জামায়াতে ইসলামীও দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে থাকলেও তারা নির্দিষ্ট কাঠামো ও শর্তপূরণের ওপর জোর দিচ্ছে।