মুর্শিদাবাদের সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ আসিফ নজরুলের

পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় বাংলাদেশকে জড়ানোর ভারতের প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া প্রেস ব্রিফিংয়ের বরাত দিয়ে জানান—বাংলাদেশ এমন অপপ্রচারকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।

ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদ ও সহিংসতা

সম্প্রতি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হুগলি জেলায় ওয়াকফ আইন সংশোধনের প্রতিবাদে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়; ইট-পাটকেল নিক্ষেপ, গাড়ি পোড়ানো, রাস্তায় অবরোধ—এই সমস্ত ঘটনায় রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা দেখা দেয়।

বাংলাদেশকে জড়ানোর চেষ্টা

এই ঘটনার পর ভারতীয় কিছু সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহল দাবি করে যে, এই সহিংসতার পেছনে ‘বাংলাদেশি প্রভাব’ রয়েছে। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর নাম উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে লোকজন এনে দাঙ্গা করানো হয়েছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বক্তৃতায় অভিযোগ করেন যে, “বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতিকারীরা মুর্শিদাবাদে এসে পরিকল্পিতভাবে দাঙ্গা করছে।” এই বক্তব্যের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস-কে জড়িয়ে কূটনৈতিক আক্রমণও করেন তিনি।

আসিফ নজরুলের প্রতিক্রিয়া

এ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন—“পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশকে জড়ানোর ভারতের চেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।” তিনি আরও জানান, সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “বাংলাদেশ সরকার ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে এবং এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।”

কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন মহল এই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এমন একটি সংবেদনশীল বিষয়ে কোনো প্রমাণ ছাড়াই প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে দায়ী করার মধ্য দিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক তদন্ত ছাড়া মন্তব্য করা দায়িত্বজ্ঞানহীন।

বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, তারা সবসময় মানবাধিকার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সচেষ্ট এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।