শেখ হাসিনাসহ ১২ সাবেক শীর্ষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ইন্টারপোল-এ ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)। তাঁদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।
রেড নোটিশের আবেদন যাঁদের বিরুদ্ধে
আবেদনে যাঁদের নাম রয়েছে তারা হলেন:
- শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী
- ওবায়দুল কাদের, সাবেক সেতুমন্ত্রী
- আসাদুজ্জামান খান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী
- হাছান মাহমুদ, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক বস্ত্রমন্ত্রী
- মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী
- শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক মেয়র, ডিএসসিসি
- তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা
- নসরুল হামিদ, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
- মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি
অভিযোগ ও প্রেক্ষাপট
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিনটি মানবতাবিরোধী মামলার তদন্ত চলছে। এর মধ্যে রয়েছে:
- জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যা ও গণহত্যা
- ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর-এ হেফাজতের বিরুদ্ধে অভিযান
- গুম-খুনের ঘটনা
বেনজীর আহমেদ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ আর্থিক দুর্নীতির। দুদকের আবেদনে একটি আদালত তাঁর বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির নির্দেশ দেয়। তিনি গত বছর মে মাসে দেশ ছাড়েন।
প্রক্রিয়াধীন আবেদনের অগ্রগতি
এনসিবি ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন জমা দিয়েছে। ইন্টারপোল-এর ওয়েবসাইটে এখনো এই ১২ জনের নাম দেখা না গেলেও, পুলিশ জানিয়েছে, রাজনৈতিক সংবেদনশীলতা থাকায় এই ধরনের আবেদন যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয় ইন্টারপোল।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক ইনামুল হক জানান, রেড নোটিশ সরাসরি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নয়, তবে এটি জারি হলে অভিযুক্তরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েন।
বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি
ভারত ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও বাস্তবায়ন সহজ নয়। কারণ, অনেক অভিযুক্ত অন্য দেশের নাগরিকত্ব বা স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেয়ে গেছেন।
শেখ হাসিনা এখন কোথায়?
৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান এবং সেখানেই অবস্থান করছেন। তাঁকে ফেরত আনার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেছে।
রেড নোটিশ জারির ফলে কী হতে পারে?
- অভিযুক্তরা বিশ্বের ১৯৬টি সদস্য দেশে ভ্রমণের সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন
- ইন্টারপোলের সহায়তায় অবস্থান শনাক্তের মাধ্যমে প্রত্যর্পণের সম্ভাবনা বাড়ে
- বিশেষ করে বেনজীরের মতো আর্থিক অপরাধে অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে