ভরা মৌসুমে হঠাৎ দ্বিগুণ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম—এখন খুচরা বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। যুগান্তরের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, একদল অসাধু মজুতদার সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে পরিকল্পিতভাবে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। এই চক্র ভারত থেকে আমদানি বন্ধের অজুহাতে দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজ গুদামজাত করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।
পরিকল্পিত বাজার অস্থিরতা
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে যেভাবে রমজানে সফল হয়েছে, একই কৌশল এখন অবলম্বন করতে হবে। কারণ, সিন্ডিকেট আগামী জুলাইয়ের মধ্যে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার ওপরে নিতে চায়।
কাওরান বাজার-এর পাইকারি বিক্রেতা মো. মকবুল জানিয়েছেন, “পুরোনো সিন্ডিকেট ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে আবার সক্রিয় হয়েছে।” তিনি জানান, ভরা মৌসুমে পেঁয়াজ মজুত করে এই সংকট তৈরি করা হয়েছে।
সবজির বাজারেও অস্থিরতা
শুধু পেঁয়াজ নয়, অন্যান্য সবজির দামেও অস্বাভাবিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজধানীর খুচরা বাজারে:
- শসা: ৮০ টাকা/কেজি
- কাঁকরোল: ১২০-১৪০ টাকা
- ঢ্যাঁড়শ, ধুন্দুল, ঝিঙা, গোল বেগুন: ১০০ টাকা
- কচুর লতি, বরবটি, চিচিঙ্গা: ৮০ টাকা
- কাঁচা মরিচ: ১০০ টাকা
জনসাধারণের উদ্বেগ
মালিবাগ কাঁচাবাজার-এ নিত্যপণ্য কিনতে আসা মো. শাকিল বলেন, “রোজা ও ঈদের সময় স্বস্তির বাজার ছিল। এখন আবার সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করছে। সরকার যদি এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তা হবে ব্যর্থতা।”
ক্যাবের মতামত
কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন বলেন, “যারা বাজারে হঠাৎ দাম বাড়িয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
সরকারি উদ্যোগ
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানায়, পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কারা আছে, তা শনাক্তে তিন স্তরে অভিযান চালানো হবে।
সামগ্রিকভাবে, রমজান ও ঈদের সময় সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণ প্রশংসিত হলেও এখন আবার সেই পুরোনো বাজার সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ফলে নতুন করে চক্রান্তের মুখে পড়ছে সরকার। বাজারে স্বস্তি ফেরাতে কঠোর নজরদারি এবং শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট মহল।