বিশেষ ক্ষমতা আইনে আটক কথিত মডেল মেঘনা আলম (Meghna Alam) এখন দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তার সৌন্দর্য, স্মার্টনেস ও ইংরেজি দক্ষতা ব্যবহার করে তিনি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন, যা পরবর্তীতে প্রতারণার হাতিয়ারে পরিণত হতো। তার প্রতারণার জাল সম্প্রসারিত ছিল দেশি ও বিদেশি কূটনীতিক পর্যন্ত।
রাষ্ট্রদূতদের লক্ষ্য করে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত (Saudi Arabia) সহ তিনজন বিদেশি কূটনীতিককে ফাঁদে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মেঘনার বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে একজন ২০২৪ সালের নির্বাচন-পূর্ব সময়ের আলোচিত রাষ্ট্রদূত এবং অন্যজন সার্কভুক্ত একটি দেশের বর্তমান রাষ্ট্রদূত। তাদের কাছ থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ থাকলেও, মর্যাদার প্রশ্নে তারা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি।
গোয়েন্দা তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
মেঘনার সহযোগী দেওয়ান সমীর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মেঘনার মোবাইল ফোন ও পেনড্রাইভ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তার সঙ্গে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
পরিকল্পিত প্রতারণার কৌশল
পুলিশ বলছে, মেঘনা আলম একটি সুপরিকল্পিত প্রতারণা চক্র পরিচালনা করতেন। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ছুতোয় তিনি দূতাবাসের জনসংযোগ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতেন, এরপর রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে পৌঁছে ব্ল্যাকমেইল করতেন। ডিজিটাল ছবি ও ফটোশপের মাধ্যমে প্রতারণার ফাঁদ পেতে অর্থ আদায় করতেন তিনি।
আটক ও রিমান্ড
গত ৯ এপ্রিল রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা (Bashundhara Residential Area) থেকে তাকে আটক করা হয়। এরপর আদালত তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের রিমান্ডে পাঠান। একই রাতে গ্রেফতার করা হয় তার সহযোগী সমীরকেও।
তদন্তে আরও বিস্ময়
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গোয়েন্দারা বলছেন, তদন্ত যতই এগোচ্ছে, ততই উন্মোচিত হচ্ছে এক ভয়াবহ প্রতারণার জগত। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে মেঘনা আলম এখন এক চাঞ্চল্যকর নাম।