আত্মগোপনে ১৮৭ পুলিশ কর্মকর্তা, অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা

জুলাই অভ্যুত্থান (July Uprising)–পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ১৮৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা এখনো কর্মস্থলে ফেরেননি। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার নির্দেশনা দিলেও তারা আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানায় পুলিশ সদর দপ্তর (Police Headquarters)।

অবস্থান অজানা, গুঞ্জন চলছে দেশত্যাগ নিয়ে

এআইজি ইনামুল হক সাগর (Inamul Haque Sagar) জানান, অনুপস্থিত সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুপস্থিতদের অনেকেই হয়তো দেশ ছেড়ে গেছেন— এমন গুঞ্জন ছড়ালেও নিশ্চিত তথ্য নেই।

তালিকাভুক্ত পলাতকদের মধ্যে রয়েছেন:
মনিরুল ইসলাম (Monirul Islam) – পুলিশের বিশেষ শাখার সাবেক প্রধান
হাবিবুর রহমান (Habibur Rahman) – সাবেক ডিএমপি কমিশনার
হারুন-অর-রশীদ (Harun-Or-Rashid) – ডিবির সাবেক প্রধান
বিপ্লব কুমার সরকার (Biplob Kumar Sarkar) – অতিরিক্ত ডিআইজি
প্রলয় কুমার জোয়ারদার (Proloy Kumar Joardar)
সৈয়দ নুরুল ইসলাম (Syed Nurul Islam)

পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন

ওই সময় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা বিরোধী মত দমন ও নির্বিচারে গুলির নির্দেশের জন্য দায়ী ছিলেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্যমতে, অভ্যুত্থান চলাকালে ১,৪০০ জনের বেশি নিহত হন। তাদের অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মারা যান।

‘ভাতের হোটেল’ কুখ্যাতি ও হারুনের গা-ঢাকা

ভাতের হোটেল’ বলে কুখ্যাত হয়ে ওঠে ডিবি অফিস (DB Office)। হারুন-অর-রশীদ আন্দোলনকারীদের ডিবিতে ধরে এনে খাবার খাওয়ানোর ভিডিও প্রকাশ করতেন। পরে জানা যায়, তিনিও দেয়াল টপকে পালিয়ে যান। তার অবস্থান নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি।

সরকার পরিবর্তনের পর পাল্টায় চিত্র

অন্তর্বর্তী সরকার (Interim Government) গঠন ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)–এর নেতৃত্বে প্রশাসনিক কাঠামো নতুনভাবে সচল হয়। মাঠে সক্রিয়তা দেখা যায় পুলিশে, বিশেষ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (Jahangir Alam Chowdhury) দায়িত্ব নেওয়ার পর।

ছাত্রলীগ পরিচয়ে ৮০ হাজারের বেশি নিয়োগ

৯ ডিসেম্বর ডিএমপি কমিশনার এস এম সাজ্জাত আলী (SM Sajjat Ali) জানান, গত ১৫ বছরে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের অন্তত ৮০ হাজার পুলিশে নিয়োগ হয়েছিল। আন্দোলনের সময় যারা পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়ে কাজ করেছে, তাদের অনেকে এখন পলাতক।